জিটিএ-র ‘চিফ এগজিকিউটিভ’ হিসাবে অনীত থাপাকে শপথ নেওয়ানোর পরেই দুর্নীতি ও অডিটের প্রসঙ্গ তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বৃহস্পতিবার সকালে দার্জিলিঙের গোর্খা রঙ্গমঞ্চ বা ভানু ভবনে শপথের অনুষ্ঠান হয়। তার আগে জিটিএ-র সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যেরা সভা করে অনীতকে ওই পদের জন্য নির্বাচিত করেন। রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে জানান, গত ২০১৯ থেকে জিটিএ-তে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে, এর অডিট হওয়া উচিত এবং জিটিএ আইন ঠিক ভাবে মানা হয়নি। তাঁর বক্তব্য, এ বছর জিটিএ-র তৃতীয় বারের জন্য ভোট হওয়া উচিত ছিল, সেটা দ্বিতীয়বারের জন্য হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এ বার থেকে প্রতি বছর অডিট করতে হবে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে মামলা করা হবে।’’
অনুষ্ঠানে সদস্যেরা রাজ্যপালের ভাষণকে হাততালি দিয়ে সমর্থন করেন। পরে জিটিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অনীত থাপা বলেন, ‘‘আমরা অডিটকে বারবারই স্বাগত জানিয়েছি। রাজ্য সরকারের তরফে অডিট করা হয়। আগামিদিনে স্বচ্ছতা বজায় রেখেই কাজ হবে।’’ অনীতের সংযোজন, ‘‘নতুন দার্জিলিং তৈরির জন্য পাহাড়বাসী রায় দিয়েছেন। আমাদের দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছে।’’
এর আগেও বহু বার জিটিএ দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যপাল। একাধিক বার অডিটের প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি অডিটের ব্যবস্থা করাবেন বলেও জানিয়েছেন। এ দিন তিনি ২০১৯ সাল থেকে দুর্নীতির কথা বেশি বলেছেন, যা নিয়ে জিটিএ সদস্যদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। তেমনই, পাহাড়ের নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জিটিএ-তে স্পেশাল অডিট শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে প্রথম বার। সেই সময় চিফ এগজিকিউটিভ ছিলেন বিমল গুরুং, বিজেপির সহযোগী দল ছিল মোর্চা।
মোর্চার নেতাদের অনেকেই জানান, অডিট শুরু হতেই পাহাড়ের অনেক কাজের গাফিলতি ধরা পড়া শুরু হয়। রাজ্যের তরফে দফায় দফায় দল পাঠিয়ে হিসাবের অডিট চলে। সেই রিপোর্ট সরকারের কাছে রয়েছে। ঠিক তখনই নতুন করে আন্দোলনে পাহাড় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আগুন জ্বলে পাহাড়ে। অনির্দিষ্টকালের বন্ধ হয়। তর মধ্যেও সমতল থেকে অফিসারেরা গিয়ে অডিটের কাজ চালিয়েছেন। গুরুং বা তাঁর দল তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
গত মঙ্গলবার দার্জিলিং ম্যাল চৌরাস্তায় জিটিএ-র ৪৫ জন নির্বাচিত সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। সে্খানে মু্খ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। এ দিনও শৈলশহরে সকালে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে নিয়মমাফিক রাজ্যপালের অনুষ্ঠানে যে তিনি থাকবেন না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। শিলিগুড়ি ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী ভানু ভবনে না ঢুকলেও বাইরে গাড়ি দাঁড় করান। সেখানে ছিলেন অনীত থাপা, মিরিকের তৃণমূলের চেয়ারম্যান এলবি রাইরা। তাঁদের একজোট হয়ে আরও ভাল দার্জিলিং তৈরির নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, আবারও আসবে। বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অনীতদের শুভেচ্ছা জানিয়েছি। পাহাড় শান্তিতে থাকুক। উন্নতি হোক। সবাই ভাল থাকুন। এটাই আমরা চাই।’’