Advertisement
E-Paper

একটাই যন্ত্র, চলে টানাটানি

হাতেনাতে দেখা গেল কদমতলায়। সেখানে একটি বাজির দোকানে গিয়ে চকোলেট বোম চাইতেই সঙ্গে সঙ্গে এসে গেল। দাম বলা হল প্যাকেট প্রতি ৮০টাকা।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:৩৩
 সদর ট্র্যাফিকের অফিসের সামনে রাস্তায় পোড়ান হচ্ছে বাজি।নিজস্ব চিত্র

সদর ট্র্যাফিকের অফিসের সামনে রাস্তায় পোড়ান হচ্ছে বাজি।নিজস্ব চিত্র

পাঁচশো বর্গকিলোমিটারেরও বেশি এলাকা। তার মধ্যে রয়েছে একটি পুরসভা আর ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত। আর এই গোটা এলাকার জন্য পুলিশের হাতে রয়েছে মাত্র একটি দূষণ মাপার যন্ত্র। কখনও তা নিয়ে ছুটতে হয় মানিকগঞ্জে, আবার খবর পেলে সেখান থেকে ২০ কিলোমিটার উজিয়ে আসতে হয় জলপাইগুড়ি শহরে। আবার নালিশ এলে শহর থেকে ছুটে যেতে হয় পাহারপুরের ভিতরের কোনও গ্রামে। এক পুলিশ কর্মীর কথায়, “ছোটাছুটিই সার। কোথাও শব্দবাজি ফাটছে শুনে যন্ত্র নিয়ে পৌঁছতে যত সময় লাগে, ততক্ষণে সব শান্ত হয়ে যায়।”

মহালয়ার সময়ে জলপাইগুড়িতে দেদার শব্দবাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ। কিন্তু সেই ঘটনায় কোনও ধরপাকড় হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। কোন বাজি নিষিদ্ধ তা বোঝা যায় শব্দ কত ডেসিবেল তার উপরে। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় শব্দ মাপার এবং বায়ু দূষণ দেখার যন্ত্র একটিই রয়েছে। মহালয়ার রাতে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত সেই যন্ত্র নিয়ে ছুটে বেড়ানো কার্যত অসম্ভব বলে মানছেন পুলিশকর্তারা।

মহালয়া থেকে দীপাবলিতে বাজি পোড়ানোর প্রবণতা সাধারণত বেশি থাকে। আজ রবিবার রাতে ফের শব্দবাজির তান্ডবের আশঙ্কা করছেন শহর ও লাগোয়া গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের একাংশ। নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফেটেছে প্রমাণ করতে শব্দ দূষণ মাপার যন্ত্র সঙ্গে রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে একটি যন্ত্র নিয়ে টানাটানি শুরু হবে পুলিশের নানা টহলদারি দলের মধ্যে। জলপাইগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্র কদমতলায় যে পুলিশ কর্মীরা থাকবেন তাঁদের হাতে যন্ত্র থাকলে, দিনবাজারে থাকা পুলিশ কর্মীরা সেই এলাকায় শব্দবাজি ফাটলে তা শব্দের মাত্রা মাপতে পারবেন না। এই ফাঁক গলেই নানা জায়গায় শব্দবাজির তাণ্ডব চলবে বলে আশঙ্কা।

শুধু শব্দবাজি নয়, বাতাসে দূষণ ছড়ায় এমন বাজিও নিষিদ্ধ। কোনও বাজি পোড়ার পরে সেই এলাকার বাতাসের গুণমানও পুলিশের যন্ত্রে ধরা পড়ে। বাতাসের গুণমান মেপেও পদক্ষেপ করতে পারে পুলিশ। সেখানেও সমস্যা যন্ত্র একটা হওয়ায়। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, “পুলিশের একাধিক দল তৈরি করা হয়েছে। দীপাবলির সন্ধ্যা থেকে সর্বত্র নজরদারি চলবে।”

ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ির বিভিন্ন বাজির দোকানে নিষিদ্ধ শব্দবাজি মিলছে বলে অভিযোগ। বাজির দোকানের পরিবর্তে আশেপাশের কোনও গোপন জায়গা থেকে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবছর দিনবাজারের বাজির দোকানগুলিতে পুলিশ বেশি নজরদারি চালায়। সেই সুযোগে শহরের অন্য এলাকায় নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি চলছে বলে দাবি। যা হাতেনাতে দেখা গেল কদমতলায়। সেখানে একটি বাজির দোকানে গিয়ে চকোলেট বোম চাইতেই সঙ্গে সঙ্গে এসে গেল। দাম বলা হল প্যাকেট প্রতি ৮০টাকা।

জলপাইগুড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মুখপাত্র রাজা রাউত বলেন, “যা দেখি-শুনি তাতে দূষণ নিয়ে সবাই চিন্তিত। কিন্তু দূষণ মাপার পরিকাঠামোটুকু নেই। ফলত দূষণ আটকানোও যাচ্ছে না। আরও কত দীপাবলি দূষণে কেটে যাবে কে জানে!”

Jalpaiguri Kalipuja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy