দেশজুড়ে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫টি এটিএম ভেঙে টাকা লুটের পরে শেষমেশ জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের এই দল। গত ১৩ জুন রাতে ময়নাগুড়ি থানার অন্তর্গত বোলবাড়ি এলাকার এটিএম ভেঙে টাকা লুটে চার জন ধরা পড়লেও, এখনও অধরা এক। ধৃতদের থেকে জানা গিয়েছে, দেশের প্রায় ৭০ থেকে ৭৫টি এটিএম ভেঙে টাকা লুট করেছে তারা। উত্তরপ্রদেশ, কেরালা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অপরাধমূলক কাজে জড়িত ছিল এই দল। এ রাজ্যেও একাধিক জায়গায় এটিএম লুটের পিছনে রয়েছে ধৃতরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের কাছে আধুনিক এসইউভি গাড়ি ছিল। তবে শেষরক্ষা হয়নি তাতে। পুরনো গাড়ি নিয়েই তাদের ধাওয়া করে পুলিশের বিভিন্ন দল।পুলিশের তাড়া খেয়ে গাড়ি ফেলে বৈকন্ঠপুর জঙ্গলে ঢুকলেও, সেখান থেকে বেরোনোর রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিল না তারা। জানা গিয়েছে, জঙ্গলের ভিতরে তল্লাশি অভিযান চালাতে গিয়ে, পুলিশ এবং বনকর্মীদের নানা বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে। কখনও হাতির দল, কখনও বাইসনের মুখোমুখি হয়েছেন পুলিশকর্মীরা।
তদন্তে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, এই রাজ্যে প্রবেশের আগে দিল্লি থেকে ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকার গ্যাসকাটার-সহ অন্য সামগ্রী কিনেছিল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় অসম থেকে থেকে এ রাজ্যে ঢোকে দলটি। ময়নাগুড়ি এলাকার একটি ধাবায় খাওয়া-দাওয়া করার পরে, বোলবাড়ি এলাকায় গিয়ে লুট করা এটিএমটিতে নজরদারি চালায়। অত্যাধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে মিনিট দশেকের মধ্যে এটিএম কেটে টাকা লুট করে তারা।
ময়নাগুড়ির বোলবাড়ির ওই এটিএমটিকে কেন টার্গেট করা হয়েছিল? তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মূলত বাজার এবং হাট এলাকার এটিএমগুলিকে বেছে নেয় ওই দুষ্কৃতীরা। যেখানে টাকা বেশি থাকবে বলে আন্দাজ করেছিল তারা। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সমীর আহমেদ বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা দিনরাত এক করে এই ঘটনার অপরাধীদের ধরার জন্য কাজ করেছে। এটা তাই দলগত সাফল্য। এক জন অভিযুক্ত এখনও পলাতক। তাকে খুব দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)