মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় কারও নাম প্রথম দশে নেই। সার্বিক পাশের হারের তালিকায় স্থান হয়েছে সর্বনিম্নে। এক নজরে মাধ্যমিকের ফলের নিরিখে এমনই অবস্থান জলপাইগুড়ি জেলার। কয়েক বছর ধরেই পাশের হারে সব জেলার পিছনে থাকছে জলপাইগুড়ি। এ বছরেও ‘করুণ’ পরিস্থিতি জলপাইগুড়ি জেলা সদরের স্কুলগুলির। প্রতি জেলার জন্য প্রথম দশের যে তালিকা পর্ষদ প্রকাশ করেছে, তাতে জলপাইগুড়ির তালিকায় জেলা সদরের মাত্র চারটি স্কুল রয়েছে। প্রথম পনেরো জনের মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলা সদরের স্কুলগুলির মাত্র পাঁচ জন পড়ুয়া রয়েছে। ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকার কোনও স্কুল সেই তালিকায় নেই। মাধ্যমিকে জেলার এমন ফলাফল দেখে শিক্ষাবিদেরা উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য জুড়েই যে শিক্ষক সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তাতে জলপাইগুড়ি জেলা আরও পিছিয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা।
জলপাইগুড়ির এক প্রধান শিক্ষকের কথায়, “আরও পিছিয়ে তালিকার বাইরে তো ছিটকে যেতে পারবে না, জলপাইগুড়ি হয়তো রাজ্যের জেলাভিত্তিক তালিকার নীচেই থাকবে। কিন্তু শিক্ষার সার্বিক ক্ষতি হয়ে যাবে। অদূর ভবিষ্যতে সেই প্রভাব পড়বে জেলার সংস্কৃতিতেও।” জলপাইগুড়ির জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বালিকা গোলে বলেন, “স্কুলগুলিকে চেষ্টা চালাতে হবে, নজরদারি বাড়াতে হবে।”
এ বছরে জলপাইগুড়িতে মাধ্যমিক পাশ করেছে ৬৯.৪৭ শতাংশ পড়ুয়া। তার ধারেকাছে অন্য কোনও জেলা নেই। আলিপুরদুয়ার থেকে দার্জিলিং— সব জেলাতেই পাশের হার সত্তর শতাংশের বেশি। জেলার সার্বিক খারাপ ফলাফলের জন্য ডুয়ার্সের চা বলয়কে দায়ী করা হত। এ বারেও কয়েকটি সংগঠনের তরফে ডুয়ার্সের চা বলয়ে স্কুলছুটের সংখ্যা তুলে ধরা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, জেলা সদর পিছিয়ে রয়েছে কেন?
কয়েক বছর ধরে মেধা তালিকাতেও জলপাইগুড়ি জেলা সদরের কোনও চমক নেই। শিক্ষকদের একাংশের দাবি, ‘উৎস্যশ্রী’র বদলিতে জলপাইগুড়ি থেকে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা চলে গিয়েছেন। সেই ধাক্কা জেলা এখনও সামলাতে পারেনি। যদিও পাল্টা প্রশ্ন রয়েছে, কোচবিহারের গ্রামের স্কুল, মালদহের প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল কী ভাবে মেধা তালিকায় ঠাঁই পাচ্ছে।
জেলা শহরের সোন্নাউল্লা হাইস্কুল, জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল, সুনীতিবালা বালিকা বিদ্যালয়, আশালতা বসু বিদ্যালয় থেকে পড়ুয়ারা জলপাইগুড়ি জেলার মেধা তালিকায় রয়েছে। ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ির স্কুল জেলার মেধা তালিকার বেশি দখল করেছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)