E-Paper

বাগানের শ্রমিক লাইনে দেওয়া হবে পাট্টা, দাবি প্রশাসনের

চা বাগানের শ্রমিক আবাসনের জমিতে পাট্টা দেওয়া নিয়ে বাগান পরিচালকদের একাধিক সংগঠন ইতিমধ্যেই আপত্তি তুলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৪ ০৬:৩২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

চা বাগানে জমি পাট্টা দেওয়া নিয়ে অবস্থান জানাল প্রশাসন। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্য বলেন, “সরকারি নির্দেশে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে চা বাগানের অব্যবহৃত এবং বাড়তি জমিতে পাট্টা দেওয়া হবে। শ্রমিকদের আবাসন এলাকায় চা চাষ হয় না। বাগানের অব্যবহৃত জমিতে পাট্টা দেওয়া হবেই।” প্রায় সাড়ে তিন হাজার চা শ্রমিকের পাট্টা প্রস্তুত বলে প্রশাসনের দাবি। শীঘ্রই সেগুলি দেওয়া হবে। সম্ভবত চলতি সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি সভা থেকে সেই পাট্টা বিলি হবে।

এক লক্ষ চা শ্রমিক তাঁদের দীর্ঘদিনের বসবাসের জায়গাতেই জমির পাট্টা পেতে চলেছেন জলপাইগুড়িতে। এমনই পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। তার বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজার চা শ্রমিক পাট্টা পেয়ে গিয়েছেন। তাঁদের একাংশ পেয়েছেন চা বাগান লাগোয়া জমিতে অথবা চা সুন্দরী প্রকল্পের আবাসনে। তবে সম্প্রতি যে পাট্টা বিলি শুরু হয়েছে এবং যে পাট্টা আগামিতে বিলি হবে সেগুলি সবই হবে চা বাগানের যে শ্রমিক লাইনের বাড়িতে। এত দিন ধরে বংশপরম্পরায় শ্রমিকেরা থেকেছেন যেখানে, সেখানেই।

এত দিন যে বাড়ি চা শ্রমিকদের কাছে ছিল ‘কোম্পানির আবাসন’। এ বার সেটিই হতে চলেছে নিজের বাড়ি। জমির পাট্টার সঙ্গে বাড়ি তৈরি করা বা অন্যান্য পরিকাঠামোর জন্য দেওয়া হবে আরও এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা। আগামী বিধানসভা ভোটের আগে, জলপাইগুড়ি জেলার লাখের কাছাকাছি চা শ্রমিকদের পাট্টা দিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য। এক সময়ে ছোটনাগপুর মালভূমি থেকে চা বাগানে কাজে আসা শ্রমিক পরিবারগুলি চা বাগানেই নিজেদের স্থায়ী ঠিকানা পেতে চলেছে।

চা বাগানের শ্রমিক আবাসনের জমিতে পাট্টা দেওয়া নিয়ে বাগান পরিচালকদের একাধিক সংগঠন ইতিমধ্যেই আপত্তি তুলেছে। চা বাগান পরিচালকদের দুই সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’ এবং ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র ডুয়ার্স-তরাই শাখা চা শ্রমিক লাইনের জমিতে পাট্টা দেওয়ার আইনত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই দুই সংগঠনের একাধিক বাগান এখনও প্রশাসনকে সম্মতি পত্র দেয়নি। প্রশাসন বাগানগুলির পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনাও চালাচ্ছে। তবে সম্প্রতি জেলা তথা রাজ্য প্রশাসন ঠিক করেছে, এ নিয়ে ‘নমনীয়’ মনোভাব নেওয়া হবে না।

চা শ্রমিকদের সরাসরি জমির পাট্টা এবং সেই সঙ্গে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিচ্ছে তৃণমূল সরকার, যার ফলে লোকসভা ভোটেও লাভ তোলার আশা তৃণমূলের। কেন্দ্রীয় সরকারের আবাস প্রকল্পের টাকা বন্ধ। সেই সুযোগে জমি এবং বাড়ি তৈরির টাকা দিয়ে নিজেদের জমি শক্ত করতে চাইছে তৃণমূল।

জেলা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি তপন দে বলেন, “চা শ্রমিকদের অধিকার দিচ্ছে তৃণমূল সরকার। শ্রমিকেরা বলছেন, দিল্লির ভোট না বাংলার ভোট বুঝি না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই থাকব।” বিজেপির জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, “উদ্বাস্তু পাট্টা দেওয়া হচ্ছে চা শ্রমিকদের। তাঁরা উদ্বাস্তু নাকি! সরাসরি জমি দিতে হবে, পুরো অধিকার দিতে হবে। রাজ্য সরকার শুধু ভোটের আগে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jalpaiguri Tea Garden Wokers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy