পর্যটন মরসুম শুরু হলেই গাড়ির চালকদের চাহিদা বেড়ে যায় সিকিমে। তাই দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, ডুয়ার্সের অনেক চালকই সিকিমে গিয়ে দেড়-দু’মাস গাড়ি চালান। তাঁরা সিকিমের বিপদসঙ্কুল চড়াই-উৎরাইয়ের ব্যাপারে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল না হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। যেমন, গত সোমবার ঋষিবাজারে খাদে যে গাড়ি উল্টে উত্তর ২৪ পরগনার ৫ পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে, সেটি চালাচ্ছিলেন দার্জিলিঙের যুবক অসীম রাই। তিনি ঋষি, কালুকের রাস্তাঘাটের সাম্প্রতিক হাল সম্পর্কে কতটা ওয়াকিবহাল তা নিয়ে পুলিশ ও পরিবহণ দফতরের সংশয় রয়েছে। বাইরের রাজ্য থেকে যাওয়া গাড়িচালকদের তথ্যপঞ্জি (ডেটা ব্যাঙ্ক) তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিকিম।
সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর আইনি পরামর্শদাতা তথা কে টি গ্যালসেন বলেন, ‘‘সিকিমে পর্যটন মরসুমে দার্জিলিং, তরাই, ডুয়ার্স থেকে বহু চালক গাড়ি চালাতে ডেরা বাঁধেন। সকলের পাহাড়ে চালানোর দক্ষতা সমান নয়। আমাদের পক্ষে কে, কতটা দক্ষ তা জানাও সম্ভব নয়। কারণ, কোনও বিশদ তথ্যই নেই। তাই গাড়ি মালিক ও চালক সংগঠনের সহযোগিতা নিয়ে বাইরের চালকদের ব্যাপারে একটি ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরি দরকার। রাতারাতি তা হবে না। প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। একটু সময় লাগবে।’’
সিকিম পুলিশও চাইছে স্থানীয় ও বাইরের চালকদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি হোক। সেই তালিকা নানা সরকারি ও বেসরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া হলে ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’ দেখে কোন চালকের কত অভিজ্ঞতা, সেটাও আগাম জানতে পারবেন পর্যটকেরা। সিকিমের পশ্চিমাঞ্চলের পুলিশ সুপার তেনজিং লোডে লেপচা বলেন, ‘‘চালকদের ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরি হলে যাঁরা অপেক্ষাকৃত নতুন, তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যাবে। অভিজ্ঞ চালকরাও কোন রুটে, কোথায় বেশি ঝুঁকি, সেটাও নতুনদের জানাতে পারবেন।’’ পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, পেলিং-রাভাংলা, ছাঙ্গু-নাথুলার বেশ কয়েকটি এলাকা অতি মাত্রায় বিপদসঙ্কুল বলে মনে করেন চালকদের অনেকেই। সে জন্যই পুলিশ চাইছে, বাইরের চালকদের এলাকা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরির সব রকম চেষ্টা হোক।
ঘটনা হল, অসীমের মামাবাড়ি ঋষিতে। ছোট থেকেই এলাকা চেনেন। কিন্তু, গাড়ি চালানোর পেশা বেছে নেওয়ার পরে বেশির ভাগ সময় দার্জিলিঙে চালান তিনি। বছর দুয়েক ধরে পর্যটন মরসুমে বাড়তি রোজগারের আশায় সিকিমে যান। তাঁর ওই এলাকার রাস্তাঘাট চেনার কথা। কিন্তু, অসীম স্বীকার করেছেন, তিনি ঋষিবাজারের কাছে ওই বাঁকে রাস্তার পাশে কিছুটা জায়গায় থাকা ঘাসের নীচে মাটি নেই, সেটা বুঝতে পারেননি। তাই সিকিমের ট্যাক্সি চালক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য পূরণ রাই, সোনম লেপচার মতো কয়েকজন জানান, ‘‘বৃষ্টির জন্য পুজোর মুখে বেশ কয়েকটি বাঁকে রাস্তা বিপজ্জনক হয়েছে।’’ ওই রুটে নিয়মিত না চালালে, তা বোঝা শক্ত। সিকিমে দীর্ঘ দিন ধরে গাড়ির ব্যবসায় যুক্ত জয়ন্ত সিংহ বলেন, ‘‘আগে পেলিং-রাভাংলা সহ বেশ কয়েকটি স্থানে যাতায়াতের রাস্তা মেরামত দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy