Advertisement
E-Paper

‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্ত বৃদ্ধ

এত দিন চুপ করে থাকা বৃদ্ধ অস্পষ্ট ভাবে টুকরো টুকরো করে নিজের এই পরিস্থিতির কথা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ক্লাবের কর্তাদের কাছে বলেন৷ এরপর আর দেরি করেননি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা৷ বীরপাড়ায় বেসরকারি একটি আশ্রমে যোগাযোগ শুরু করেন তাঁরা৷

পার্থ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৮ ০৪:১০
অসহায়: এ ভাবেই ছিলেন রমেনচন্দ্র দাস। নিজস্ব চিত্র

অসহায়: এ ভাবেই ছিলেন রমেনচন্দ্র দাস। নিজস্ব চিত্র

কোথাও ঠাঁই ছিল না। আতঙ্কে গুটিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। পরে একেবারেই লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যেতে চাইলেন। আলিপুরদুয়ার জংশনের কাছে রেলেরই একটি পরিত্ত্যক্ত আবাসনের ঘরে নিজেকে বন্দি করে রেখেছিলেন।

কারও সঙ্গে কথা বলতেন না৷ স্নান করতেন না৷ কাটতেন না চুল-দাড়িও৷ কেউ খাবার এগিয়ে দিলেন খেতেন৷ না হলে নয়। এমন ভাবে চলেছে টানা প্রায় পাঁচ বছর৷ কিন্তু ভাঙাচোরা সেই ঘরে তাঁকে এ ভাবে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা খবর দেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে। সেই সংগঠনের সদস্যরা বৃহস্পতিবার ছুটে গিয়েছিলেন ওই বৃদ্ধের কাছে। চুল-দাড়ি কাটিয়ে, স্নান করিয়ে নতুন জামা-কাপড় পরানোর পরে ছলছল করে ওঠে বৃদ্ধের চোখ৷ খানিকক্ষণের মধ্যে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন তিনি৷এত দিন চুপ করে থাকা বৃদ্ধ অস্পষ্ট ভাবে টুকরো টুকরো করে নিজের এই পরিস্থিতির কথা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ক্লাবের কর্তাদের কাছে বলেন৷ এরপর আর দেরি করেননি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা৷ বীরপাড়ায় বেসরকারি একটি আশ্রমে যোগাযোগ শুরু করেন তাঁরা৷

বৃদ্ধের নাম রমেনচন্দ্র দাস৷ বয়স প্রায় ৭৫৷ এলাকাতেই তাঁর বাবা-কাকার বাড়ি ছিল৷ নিজে জমিতে কৃষিকাজ করতেন৷ কিন্তু বাবা-কাকারাই সব জায়গা-জমি বিক্রি করে দেন৷ স্ত্রী অসমে রান্নার কাজ করতে চলে যান৷ ফেরেননি৷ দুই ছেলে-মেয়ে থাকলেও তাঁরা তাকে দেখেননি৷ আশ্রয় নেন জংশন প্ল্যাটফর্মে৷ বৃদ্ধের কথায়, “প্লাটফর্মে মাঝেমধ্যেই খাকি উর্দি পড়া লোকগুলি এসে বলত—এই বুড়ো যা৷ তারপর এর-ওর দোকানের সামনে রাতে থাকতাম৷ কিন্তু সেখানেও সবাই বলত—এই বুড়ো যা৷”

এলাকার ক্লাবের সদস্য জয় সেনগুপ্ত, বরুণ সরকার, অমল সরকাররা বলেন, অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বৃদ্ধ। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের রাতুল বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা বোঝানোর চেষ্টা করেছি, তাঁর পাশেই রয়েছি।’’

Homeless Elderly person NGO
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy