Advertisement
E-Paper

দফা ২ কেন্দ্র ৩

দু’টি আসনে যদি তরাই আর ডুয়ার্সের ভোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে, তো একটি আসনে ‘বর্ডার’ এলাকার ভোট। তা সে ‘বর্ডার’ বাংলাদেশ সীমান্ত বোঝাতেই হোক, বা বিহার সংলগ্ন সীমানার। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:১১

একটি আসনে যদি শাসকদলের পাল্লা ভারী থাকে, তা হলে দু’টি আসনে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।

দু’টি আসনে যদি তরাই আর ডুয়ার্সের ভোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে, তো একটি আসনে ‘বর্ডার’ এলাকার ভোট। তা সে ‘বর্ডার’ বাংলাদেশ সীমান্ত বোঝাতেই হোক, বা বিহার সংলগ্ন সীমানার।

এমনই তিন আসন নিয়ে দ্বিতীয় দফার ভোট পশ্চিমবঙ্গে।

তিন আসনের একটি জলপাইগুড়ি। এর একদিকে চা বাগান, অন্য দিকে বাংলাদেশ সীমান্ত। সৌজন্যের শহর হিসেবে পরিচিত জলপাইগুড়ি শহর এখনও তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। কিন্তু তার থেকে ঘণ্টাখানেকের দূরত্বে ধূপগুড়ি বা আরও একটু দূরের ক্রান্তি এলাকা এর মধ্যেই উত্তপ্ত হয়েছে ছেলেধরা নিয়ে গুজবে। সেই সময়ে অভিযোগ উঠেছিল, এই গুজব ছড়ানো এবং তার পরে গণপিটুনির পিছনে বিশেষ ছক রয়েছে। একে অনেকে সম্প্রদায়গত বিভাজনের কৌশল বলেও মনে করেন। সেই উত্তাপ এখন নেই। কিন্তু বিভাজনের ছাপ যে ভোটবাক্সে পড়বে না, এমন কেউ হলফ করে বলতে পারেন না।

আলিপুরদুয়ারের চা বাগান এলাকায় যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে, জলপাইগুড়িতে ততটা অবশ্য চোখে পড়ে না। তবে কি এখানকার চা বাগানে সমস্যা মিটে গিয়েছে? চা শ্রমিকদের অনেকেই বলছেন, তা নয়। তবে এখানে সরকারি সাহায্য অনেক ভাল ভাবে পৌঁছেছে।

ডুয়ার্সের চা বাগান যদি জলপাইগুড়ির বিশেষত্ব হয়, তা হলে তরাইয়ের চা বাগান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে দার্জিলিং কেন্দ্রে। তার সঙ্গে পাহাড়ের চা তো আছেই। তবে দার্জিলিং কেন্দ্রে এ সব ছাপিয়ে গিয়েছে বিমল গুরুংয়ের ছায়া। তিনি ভোটের দিন দার্জিলিং পাহাড়ে নেই। কিন্তু সেখানে মূল লড়াই তাঁর ছায়ায় ভর করা বিজেপির সঙ্গে পাহাড়ে পা জমাতে চাওয়া তৃণমূলের। এর আগে তৃণমূল দু’বার চেষ্টা করেছে বিমলের তালুকে শক্তি বাড়ানোর। ২০১৪ সালে ভাইচুং ভুটিয়াকে পাত্তা দেয়নি পাহাড়ের মানুষ। তবে ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের সময়ে পাহাড়ের তিন কেন্দ্রে বিমলের মোর্চার সঙ্গে তৃণমূলের ব্যবধান কমে। তার এক বছর পরে পুরভোটে মিরিক জিতে নেয় তারা। বহু দিন পরে এই প্রথম কোনও সমতলের দল পাহাড়ে পা রাখতে সক্ষম হয়। তার পরেই গুরুংয়ের ‘গোর্খাল্যান্ড’ আন্দোলনে ফিরে যাওয়া। পাহাড়-রাজনীতির সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূলের বাড়বাড়ন্ত দেখেই বিমল গুরুং তাঁর তূণের শেষ অস্ত্রটি বের করেছিলেন।

গুরুং এক সময়ে সুবাস ঘিসিংকে পাহাড়ে উঠতে দেননি। সেই ঘিসিংয়ের ছেলে মন এ বারে গুরুংদের সঙ্গে সমঝোতা করেছেন। এবং সেই সমঝোতার অনুঘটক বিজেপি। পাহাড়ে তৃণমূল সরকার দমন নীতি চালিয়েছে— এই অভিযোগ তুলে ধরেই প্রচার করছেন বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা। জিএনএলএফ নেতা নীরজ জিম্বাও বলছেন, তৃণমূলের হাত থেকে বাঁচতেই এই জোট। উল্টো দিকে, তৃণমূল প্রচারে ‘ভূমিপুত্র’ বিষয়টি তুলছে। তাদের বক্তব্য, বিনয় তামাংদের সমর্থনে তৃণমূল প্রার্থী অমর সিংহ রাই আদতে পাহাড়ের মানুষ। রাজু বিস্তা কিন্তু তা নন।

দার্জিলিংয়ের মতো রায়গঞ্জেও এখন অবধি জিততে পারেনি তৃণমূল। ২০১৪ সালে সেখানে কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সিকে সামান্য ব্যবধানে হারিয়েছিলেন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। তৃণমূল প্রার্থী তথা দীপার দেওর সত্যরঞ্জন দাশমুন্সি তৃতীয় হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটেও দেখা গিয়েছে, এই এলাকায় বাম, কংগ্রেসের শক্তি ভালই। পরের তিন বছরে জোর বেড়েছে বিজেপিরও। কিন্তু এই শক্তিবৃদ্ধিতে হীনবল হল কে? স্থানীয় লোকজনের কথায়, সেটা ২৩ মে ইভিএম না খোলা অবধি বোঝা যাবে না। তাঁরা বলছেন, চায়ের আড্ডায়, রাজনৈতিক আলোচনায় বা সংবাদমাধ্যমে এত দিন ধরে প্রচুর কথা হয়েছে। আপাতত মুখ বন্ধ করে এই কেন্দ্রের মানুষ ভোট দেওয়ার অপেক্ষায়। বাকিটা তোলা রইল ভবিষ্যতের জন্য।

Lok Sabha Election 2019 Vote Darjeeling Jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy