Advertisement
E-Paper

‘বন্ধ ট্রেন, নেই সুর আগমনির’

গত প্রায় এক দশক ধরে মহালয়ার সকালে আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে বামনহাটগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেনে দেবী দুর্গার আগমনের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন আলিপুরদুয়ারের কলাকুশলীরা। প্রতি বছর তা দেখতে ভিড়ও হয় যথেষ্ট।

পার্থ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:১০
২০১৮-য় আলিপুরদুয়ার জংশনে মহালয়ার অনুষ্ঠান। ফাইল চিত্র

২০১৮-য় আলিপুরদুয়ার জংশনে মহালয়ার অনুষ্ঠান। ফাইল চিত্র

রেল লাইনের দু’ধারে কাশবন পেড়িয়ে কু ঝিকঝিক শব্দে এগিয়ে চলছে ট্রেন। শরতের আকাশে-বাতাসে সেই শব্দের সঙ্গে মিলেমিশে এক হয়ে যাচ্ছে আগমনীর সুর। দেবীপক্ষের সূচনাকে স্মরণীয় করে রাখতে চলন্ত ট্রেনের কামরা থেকে শুরু করে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শিল্পীরা কখনও দেবী দুর্গার আবির্ভাব, কখনও নবদুর্গার হাতে মহিষাসুর বধের দৃশ্য ফুটিয়ে তুলছেন। এই ছবি প্রায় সকলেরই পরিচিত।

গত প্রায় এক দশক ধরে মহালয়ার সকালে আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে বামনহাটগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেনে দেবী দুর্গার আগমনের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন আলিপুরদুয়ারের কলাকুশলীরা। প্রতি বছর তা দেখতে ভিড়ও হয় যথেষ্ট। এ বছর আজ মহালয়া। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জেরে বন্ধ বামনহাটগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেন। ফলে এ বছর অনুষ্ঠানও বাতিল। আর তাতেই মন খারাপ সেই কলাকুশলীদের, যাঁরা গত এক দশক ধরে এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত।

তাদেরই একজন আলিপুরদুয়ারের আবৃত্তিশিল্পী অঙ্কনা মালাকার। বললেন, ‘‘প্রতি বছর এই দিনটার জন্য অনেক আগে থেকেই আমরা অপেক্ষা করে থাকি। মহলয়ার সকালে চলন্ত ট্রেনে চণ্ডীপাঠ থেকে শুরু করে দেবী দুর্গাকে সামনে রেখে নারীশক্তির উপর আবৃত্তি পাঠও করি। কিন্তু এ বার সব ওলট-পালট হয়ে গেল। এ বার আর নেই চলন্ত সেই ট্রেন বা ট্রেনের কামরা থেকে ছড়িয়ে পড়া সেই আগমনির সুর। এতে করে যে মনের ভিতরে যে কতটা কষ্ট হচ্ছে, তা বলে বোঝানো যাবে না।’’

দেবীপক্ষের শুরুটা একটু অন্য রকম কিছু করার লক্ষ্যে দশ বছর আগে মহালয়ার সকালে চলন্ত ট্রেনে প্রথম এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আলিপুরদুয়ার সাংস্কৃতিক সংস্থা। তার পর থেকে প্রতি বছর নিয়ম করে আলিপুরদুয়ার জংশন-বামনহাট প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কামরায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছেন সংস্থার কলাকুশলীরা। গত বছর তাদের নিবেদন ছিল নবদুর্গার অসুর বধ। যা অনেকের নজর কেড়েছিল।

মূলত আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে ট্রেন ছাড়ার আগে প্ল্যাটফর্মেই শুরু হয়ে যেত অনুষ্ঠান। তার পরে ট্রেন চলতে শুরু করলে গোটা একটা কামরা জুড়ে শুরু হয়ে যেত চণ্ডীপাঠ ও ঢাকের বাদ্দির সঙ্গে ধুনুচি নাচ। একটু বড় স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াতেই প্ল্যাটফর্মে সংস্থার শিল্পীরা দেবী দুর্গাকে বরণ করা থেকে শুরু করে দুর্গার মহিষাসুর বধ অভিনয় করে দেখাতেন।

আলিপুরদুয়ার সাংস্কৃতিক সংস্থার সম্পাদক ভাস্কর চৌধুরি বলেন, ‘‘চলন্ত ট্রেনে মহালয়ার অনুষ্ঠান নিয়ে এ বারও আমাদের নতুন নতুন অনেক পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু করোনা আবহে ট্রেন বন্ধ থাকায় তা আর হচ্ছে না। ফলে সকলেরই মন খারাপ।’’তবে সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন, ট্রেনে না হলেও আজ সকালে একটি ব্যবসায়ী সংগঠনের হলঘরে সামান্য কয়েকজন শিল্পীকে নিয়ে ছোট একটি অনুষ্ঠান হবে। আর বাকি শিল্পীদের ক্যামেরাবন্দি নিজস্ব অনুষ্ঠান সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হবে।

Mahalaya Local Train Alipurduar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy