Advertisement
E-Paper

অবশেষে ধৃত অভিযুক্ত মুন্না

মাজিদ খুনে ষড়যন্ত্র ও অভিযুক্তদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা কোর কমিটির সদস্য মহম্মদ কলিম খান ওরফে মুন্না

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০৮:৫০
ধৃত: পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে মুন্না খানকে। নিজস্ব চিত্র।

ধৃত: পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে মুন্না খানকে। নিজস্ব চিত্র।

গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে প্রায় দুই সপ্তাহ নার্সিংহোমের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছেন কলেজ ছাত্র মাজিদ আনসারি। এই দীর্ঘ সময়ে কেউ গ্রেফতার হয়নি। গত বুধবার রাত ১০টা নাগাদ মৃত্যু হয় মাজিদের। তার পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসতে থাকে গোটা কোচবিহার। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ মাজিদ খুনে ষড়যন্ত্র ও অভিযুক্তদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা কোর কমিটির সদস্য মহম্মদ কলিম খান ওরফে মুন্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যিনি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ক’দিন আগে মুন্নাকে নির্দোষ বললেও এদিন বলেন, “বিচারাধীন বিষয়ে কিছু বলব না। মাজিদের মৃত্যু দুঃখজনক।’’

কেন পুলিশ মুন্না খানকে এতদিন গ্রেফতার করল না, কেনই বা বাকি অভিযুক্তরা এখনও অধরা, তা নিয়ে ক্ষোভ পুঞ্জীভুত হয়েছে মানূষের মনে।

শুক্রবার সকাল থেকেই মাজিদের সমস্ত হত্যাকারীদের গ্রেফতার এবং কড়া শাস্তির দাবিতে তৃণমূলেরই একটি অংশ ধর্মঘটে সামিল হয়। ছাত্রছাত্রীরাও রাস্তায় নামেন। শহরের সব এলাকায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। বেসরকারি বাস পুরোপুরি বন্ধ ছিল। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও কার্যত ছুটি ছিল। সকালের দিকে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাসও আটকে দেয় আন্দোলনকারীরা। একটি বাসে ভাঙচুর চালানো হয়। সকাল ৮টার পর থেকে অবশ্য সরকারি বাস চলাচলে বাধা দেওয়া হয়নি। এদিনের বন্‌ধকে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছন বামেরা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “কারা ধর্মঘট ডেকেছে আমি জানি না। আমাদের দল ধর্মঘট বিরোধী।”

তবে তৃণমূলের অন্দরে রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরোধী শিবিরের বলে পরিচিত কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী এদিন মাজিদের বাড়িতে যান। কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে। লিখিত অভিযোগ করার পরেও কেন মন্ত্রী মুন্নাকে গাড়িতে নিয়ে দিনের পর দিন ঘুরেছেন সেই প্রশ্নও তোলেন মাজিদের হিতাকাঙ্ক্ষীরা। বিধায়ক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। কেউ ছাড় পাবে না। এদিন যে ভাবে মানুষ দোকানপাট গাড়ি বন্ধ রেখে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে তাতে স্পষ্ট মাজিদের মা-বাবার সঙ্গে প্রত্যেকে আছে।”

এই অবস্থায়, মুন্না খানকে কোচবিহার মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। বিরোধীরা কোচবিহারকে অশান্ত করে তোলার জন্য পুলিশ ও তৃণমূল উভয়কেই দুষছেন। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “কেন একজন ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেলেন, এই প্রশ্নের জবাব তৃণমূল নেতাদের দিতে হবে। কেন ছাত্র গুলিবিদ্ধ হলেও অভিযুক্তরা ধরা পড়ে না, এর জবাব পুলিশ কর্তাদের দিতে হবে।”

সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “মুন্না তো এতদিন বহাল তবিয়তে বাড়িতেই ছিলেন। কেন পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করল না? কে আড়াল করে রেখেছিল? কেউ সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পরে কি গ্রেফতার করা হল? বাকি অভিযুক্তরা কোথায় গেল? পুলিশের ভূমিকায় এমন হয়েছে। তাই পুলিশ সুপারকে বদলি করা প্রয়োজন।”

সরকারি আইনজীবী ললিতচন্দ্র বর্মন জানান, মুন্নাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক সুমন দাস সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র কোথায়? সেটি অভিযুক্তদের হাতে কী করে গেল? বাকি অভিযুক্তরা কোথায়, এই তথ্য জানতেই মুন্না খানকে পুলিশ সাতদিনের হেফাজতে নিয়েছে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”

Crime Violence Police Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy