কয়েক ঘণ্টা পরেই শুরু এ বছরের মাধ্যমিক। পরীক্ষা শুধু পড়ুয়াদেরই নয়, পর্ষদেরও। মাধ্যমিক সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করাই বড় পরীক্ষা পর্ষদের কাছে। নকল রুখতে ‘কিউআর কোড’ থেকে শুরু করে টেস্ট পেপারে সচেতনতামূলক প্রচার করেছে পর্ষদ। রাজ্যের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে সেই প্রয়াস কতটা সফল হবে, সে দিকে নজর থাকবে। উত্তরবঙ্গের মালদহে প্রশ্নফাঁস নিয়ে গত বছরও অনেক হইচই হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরেও একাধিক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছে। তাই কোচবিহার থেকে শিলিগুড়ি, মালদহ থেকে আলিপুরদুয়ার— সব জায়গায় এ বার আরও সতর্ক পর্ষদ।
রবিবার পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোথাও যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেটাই আশা করছি। পরীক্ষায় অনিয়ম কেন হবে? অভিভাবকদের একাংশের জন্য পড়ুয়ারা অনেক সময় বিপথে যায়। আমরা বারবার সচেতন করছি। দেখা যাক।’’
পর্ষদ এবং শিক্ষকদের একাংশের চিন্তাও অভিভাবকদেরই একাংশকে নিয়ে। তাঁরা জানান, অনেক অভিভাবক সমাজমাধ্যম বা অন্য কোথাও থেকে ১০০ শতাংশ ‘কমন সাজেশন’ জোগাড়ের চেষ্টা করছেন। সারা বছর পরীক্ষার্থী যেটা পড়েছে, তা বাদ দিয়ে এখন নতুন কিছু পড়ে সময় নষ্ট করা ঠিক নয়।
শিলিগুড়ির একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সামসুল আলমের কথায়, ‘‘পরীক্ষার্থীদের শান্ত থাকতে দিতে হবে। বাবা-মায়েরা অনেকে পরীক্ষাকেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছে চাপ দিতে থাকেন। এটা পড়িসনি কেন? দেখে নে। পরীক্ষার আগের রাতে এমন কিছু এড়িয়ে যেতে হবে।’’ শিক্ষকদের একাংশের কথায়, ‘‘কোনও পরীক্ষায় একটা ভুল হলে তা নিয়ে ভাবা, মনখারাপ করা ঠিক নয়। পরীক্ষা দিয়ে প্রশ্ন-উত্তর মেলানোর দরকার নেই। সব পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে ইচ্ছা হলে মেলানো যেতে পারে।’’
মালদহ রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির প্রধান শিক্ষক স্বামী তাপহরানন্দ বলেন, ‘‘পরীক্ষার আগে পরীক্ষার্থীদের বাড়তি চাপ নয় বরং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরীক্ষার মতোই এটাও একটা সাধারণ পরীক্ষা, তা বোঝাতে হবে।’’
পর্ষদ সভাপতির বক্তব্য, টেস্ট পেপারের মাধ্যমে তাঁরা পড়ুয়াদের কাছে পরামর্শ পৌঁছে দিয়েছেন। জেলায় জেলায় ঘুরে দায়িত্বপ্রাপ্তদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা পরিচালনার বিধি-নিষেধ বোঝানো হয়েছে। শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়ক সুপ্রকাশ রায় বলেন, ‘‘পর্ষদের নিয়ম মেনে পরীক্ষা যথাযথ ভাবে পরিচালনা করতে সকলেই প্রস্তুত।’’
সহ-প্রতিবেদন: জয়ন্ত সেন, অরিন্দম সাহা
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)