E-Paper

ভূষণকে সরিয়ে জেলা সভাপতি পদে মনোজ

এরই মধ্যে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের আলিপুরদুয়ারে বিজেপির মূল ‘সেনাপতি’ দলের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা তৃণমূলে যোগ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৩৫
মনোজ টিগ্গা।

মনোজ টিগ্গা।

বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতক হিসাবে দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। আগামী দিনে শুভেন্দু অধিকারীর জায়গায় তাঁকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা করা হয় কি না, রাজনৈতিক মহলে তা নিয়েও শুরু হয়েছিল চর্চা। কিন্তু মাদারিহাটের বিধায়ক সেই মনোজ টিগ্গাকেই দলের জেলা সভাপতি করল বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমাদের অভিজ্ঞ বিধায়কের অভাব থাকায় তিনিই আপাতত মুখ্য সচেতক থাকছেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আমাদের জানিয়েছেন, যাতে তাঁকেই দায়িত্বে রেখে দেওয়া হয়। আমরা তাঁকেই দায়িত্বে রাখার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। পরবর্তী কালে যদি কোনও বিধায়ক সেই পরিষদীয় অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারেন, তখন বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখা হবে।

এই ঘটনায় উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। প্রথমত, তবে কী বিরোধী দলনেতার দৌড় থেকে সরিয়ে দেওয়া হল বিজেপির এই আদিবাসী নেতাকে? দ্বিতীয়ত, বিজেপির জেলাসভাপতির দায়িত্ব সামলে মনোজের পক্ষে আর কি দলের মুখ্য সচেতকের দায়িত্ব সামলানো সম্ভব হবে? বিজেপির অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মণ বলেন, “রাজ্যের বিরোধী দলনেতা কিংবা আমাদের দলের রাজ্য সভাপতি বদল হতে পারেন বলে কোনও খবর আমার কাছে নেই। তবে আমি নিশ্চিত, মনোজ টিগ্গা বিধানসভার মুখ্য সচেতকের সঙ্গেই জেলা সভাপতির দায়িত্বও ভাল করে সামলাতে পারবেন।” মনোজ নিজেও বলেন, “আমাকে বিরোধী দলনেতা করা হতে পারে, এমন কোনও তথ্য আমার কাছে নেই। মুখ্য সচেতকের দায়িত্ব সামলেও জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলানো সম্ভব।”

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মাদারিহাট আসনে জয়ী হয়ে আলিপুরদুয়ারে প্রথম পদ্মফুল ফুটিয়েছিলেন এই মনোজই। তার পরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জয় পাওয়ার পাশাপাশি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও আলিপুরদুয়ার জেলার সব আসনে জয় পায় বিজেপি। দলের অন্দর থেকে সেই সময় মাদারিহাট থেকে দ্বিতীয় বার জয়ী হওয়া মনোজকে বিরোধী দলনেতা করার দাবি উঠেছিল। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীকে সেই পদে বসিয়ে মনোজকে বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতক করে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

এরই মধ্যে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের আলিপুরদুয়ারে বিজেপির মূল ‘সেনাপতি’ দলের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর জায়গায় ভূষণ মোদককে জেলা সভাপতি করে বিজেপি। কিন্তু ভূষণের নেতৃত্বে গত বছর হওয়া পুরভোটে জেলার দুটো পুরসভাতেই ভরাডুবি হয় বিজেপির। পঞ্চায়েত ভোটেও জেলায় জয়ী হয় তৃণমূল। গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, তার পর থেকেই দলের অন্দরে নেতৃত্ব বদলের দাবি উঠতে শুরু করে। আর শনিবার দলের সাংগঠনিক বদল করে ভূষণের পরিবর্তে আলিপুরদুয়ারে বিজেপির জেলা সভাপতি করা হয় মনোজকে। ভূষণের কথায়, “দল হয়তো আমার প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না, তাই এই বদল। তবে আমি চাই, নতুন সভাপতির নেতৃত্বে জেলায় বিজেপি আরও অনেক শক্তিশালী হোক।” মনোজ বলেন, “আমাদের দলে নেতৃত্ব বদল একটানিয়মিত প্রথা।”

তবে আলিপুরদুয়ারের রাজনৈতিক মহলে এমনও আলোচনা চলছে যে, আদিবাসী অধ্যুষিত এই জেলায় প্রকাশ চিক বরাইককে সভাপতি করে পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে বড় সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। সেই প্রকাশ আবারতৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়ে খুব শীঘ্রই রাজ্যসভার সদস্য হতে চলেছেন। এর প্রভাব যাতে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারে না পড়ে, তাই মনোজকে জেলা সভাপতি করল বিজেপি। যদিও প্রকাশ বলেন, “মনোজ টিগ্গাকে বিজেপি জেলা সভাপতি করতেই পারে। আগামী লোকসভা নির্বাচনেও আলিপুরদুয়ারে বিজেপির ভরাডুবি হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy