সড়কপথে ৩৪ জন যুবতীকে ভিন্রাজ্যে পাচার করে দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু তার আগেই পুলিশের তৎপরতায় ভেস্তে গেল সেই পরিকল্পনা। বাস থামিয়ে উদ্ধার করা হল যুবতীদের। রবিবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি বাস টার্মিনাসে ঘটনাটি ঘটেছে। খবর প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার সন্ধ্যায় আচমকা শিলিগুড়ি বাসস্ট্যান্ডে হানা দেয় পুলিশের একটি দল। সেখানে অভিযান চালিয়ে একটি বেসরকারি বিলাসবহুল বাস থেকে ৩৪ জন যুবতীকে উদ্ধার করে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অধীনস্থ প্রধাননগর থানার পুলিশ। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে এক মহিলাও রয়েছেন। ধৃতেরা হলেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা গৌতম রায়, ডুয়ার্সের মেটেলির বাসিন্দা পেট্রাস বেক এবং শিলিগুড়ির ভক্তিনগরের বাসিন্দা জয়শ্রী পাল।
অভিযানের খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে শহরে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই যুবতীদের প্রথমে বাসে করে ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তার পর সেখান থেকে ট্রেনে করে তামিলনাড়ু— পরিকল্পনা ছিল এমনটাই। জানা গিয়েছে, প্রত্যেক যুবতী-পিছু চার হাজার টাকা করে পাওয়ার কথা ছিল পাচারকারীদের। কিন্তু তার আগেই সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিল পুলিশ। জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া যুবতীদের বেশির ভাগই ডুয়ার্সের চা বাগানের বাসিন্দা। প্রত্যেককেই তামিলনাড়ুর কাপড়ের কারখানায় চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে প্রধাননগর থানার ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, ‘‘যুবতীদের সকলকেই উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশনে অভিযান চালিয়ে ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস থেকে একই ভাবে ৫৬ জন যুবতীকে উদ্ধার করেছিল রেল পুলিশ। ওই ঘটনাতেও এক মহিলা-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের এখনও হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ। শিলিগুড়ির অদূরেই ভবেশ মোড় এলাকায় একটি হস্টেল ভাড়া নিয়ে ওই যুবতীদের রাখা হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল, সুযোগ বুঝে ভিন্রাজ্যে পাচার করে দেওয়ার। সেই ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় এ বার উদ্ধার হলেন আরও ৩৪ জন যুবতী। তবে, পর পর একই ধাঁচের দু’টি ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। এর নেপথ্যে বড়সড় কোনও আন্তঃরাজ্য নারী পাচার চক্র জড়িত রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।