প্রশাসন তরফে সময় মতো গাড়ি না পাঠানোয় প্রায় ৪০ মিনিট স্টেশনে অপেক্ষা করে শেষ অবধি পুলিশের পাইলট ভ্যানে করে সরকারি অতিথি নিবাসে পৌঁছলেন রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং হর্টিকালচার মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। রবিবার সকালে শিলিগু ড়ির এনজেপি স্টেশনে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ মন্ত্রী স্টেশন থেকে দার্জিলিঙের জেলাশাসক এবং শিলিগুড়ির মহকুমা শাসককে টেলিফোন করেন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সরকারি সূত্রের খবর, জেলা প্রশাসনের ওই দুই শীর্ষ কর্তাকে টেলিফোন করে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন মন্ত্রী। তাঁর আসার খবর পুলিশ জানলেও প্রশাসন কেন জানে না, তা-র জবাবদিহি চান। শেষে স্টেশনে থাকা প্রশাসন কর্তারা এবং পুলিশ অফিসারদের একাংশ তাঁকে শান্ত করেন। একবার এক অফিসার মন্ত্রীর আসার খবর প্রশাসন আগে ঠিকঠাক জানতে পারেনি বলায় আরও রেগে যান কৃষ্ণেন্দুবাবু। কলকাতায় বিভিন্ন মহলে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জানান। শেষ প্রশাসনের জন্য অপেক্ষা না করে পুলিশের পাইলট ভ্যানে শহরে পৌঁছে নির্ধারিত অনুষ্ঠানগুলিতে যোগ দেন। পরে অবশ্য জেলা প্রশাসনের তরফে মন্ত্রীর কাছে দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন জেলাশাসক।
মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এটা পুরোপুরি দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। এমন হতে পারে ভাবতেই পারছি না। পুলিশ তো ঠিকই ব্যবস্থা নিয়েছে। তাহলে প্রশাসন একটা গাড়ি সময় মত পাঠাতে পারবে না! আর ওঁরা না পারলে বলে দিতেন, আমি নিজের ব্যবস্থা করে নিতাম।’’ মন্ত্রী জানান, প্রায় ৪০ মিনিট অপেক্ষা করে আমি শেষে পুলিশকর্মীদের অনুরোধ করে পাইলটা ভ্যানে করে পূর্ত দফতরের বাংলোয় পৌঁছাই। জেলাশাসক, মহকুমা শাসক অবশ্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
এই প্রসঙ্গে দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘আমাদের কাছে মন্ত্রীর আসার খবর ছিল না। যদিও ফ্যাক্স এসেছিল বলা হয়েছে। আমি বিষয়টি দেখছি। মন্ত্রীর কাছে দুঃখপ্রকাশ করে সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
শিলিগুড়ি হর্টিকালচার সোসাইটির বনাঞ্চল উৎসব এবং ফুল চাষের এলাকা দেখতে এদিন সকালে মালদহ থেকে পদাতিক এক্সপ্রেসে মন্ত্রী শিলিগুড়ি আসেন। মালদহ থেকে ভোর ৫-৪৫ মিনিটে ছেড়ে পদাতিক এক্সপ্রেসের সকাল ৯-১৫ মিনিট এনজেপি’তে পৌঁছানোর কথা। এদিন ট্রেনটি ১৫ মিনিট পর সাড়ে ৯টা নাগাদ এনজেপি আসে। নিয়ম মাফিক প্ল্যাটফর্মে তাঁকে রেল পুলিশের তরফে স্বাগত জানিয়ে নতুন ফ্লাইওভার দিয়ে বাইরে নিয়ে আসা হয়। স্টেশন চত্বরের ভিআইপি পার্কিং এরিয়াতে পাইলট ভ্যানও পৌঁছে যায়। কিন্তু তার পরেই গোলমালের সূত্রপাত্র।
বাইরে মন্ত্রীর গাড়ির খোঁজ শুরু হয়। প্রশাসনের অফিসার, পুলিশের লোকজনও ছোটাছুটি করতে থাকেন। রাজ্যের একটি ক্যাবিনেট মন্ত্রীর গাড়ি নেই শুনে স্টেশনে অনেক যাত্রীরাও অবাক হয়ে যায়। এর পরে প্রায় ৪০ মিনিট মন্ত্রী ভিআইপি পার্কিং এরিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। শেষে পুলিশের পাইলট ভ্যানে উঠে বসেন।
এদিন সকালে হর্টিকালচার সোসাইটির অনুষ্ঠানে প্রথম মন্ত্রীর যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তাই পূর্ত দফতরের বাংলোয় পৌঁছে গিয়েছিলেন সোসাইটির সভাপতি তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি নান্টু পাল। বেশ কিছু সেখানে অপেক্ষার পর নান্টুবাবুও সব শুনে গাড়ি নিয়ে স্টেশনে দিকে রওনা হন। নান্টুবাবু বলেন, ‘‘এমন যাতে আর না হয়, তা প্রশাসনের কর্তাদের দেখা উচিত।’’ রাতে দার্জিলিং মেলে তিনি মালদহে ফেরেন।
দাগাপুরের সোসাইটির সেন্টারে গিয়ে এদিন বনাঞ্চল উৎসবে গিয়ে চারাগাছ রোপণ করেন মন্ত্রী। আগামী পাঁচদিন সেখান থেকে গাছও বিলি করা হবে। পর মন্ত্রী বন্ধুনগরের একটি ফুল চাষের সেন্টারও যান। শিলিগুড়িতে দ্রুত ফুলবাজার করার জন্য দফতরের অফিসারদের নির্দেশও দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy