মাথায় মুকুট, হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে মন্ত্রী। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
অনুব্রত মণ্ডলের পরে এ বার রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
বিধানসভা ভোটে দলের জয়ের পরে বীরভূমের তৃণমূল কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে সোনা, রুপোর মুকুট ও তরোয়াল উপহার দিয়েছিলেন। এ বার কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকেও বহুমূল্য মুকুট ও হার উপহার দিলেন শাসক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
সোমবার সন্ধ্যায় কোচবিহারের ডাউয়াগুড়িতে সংবর্ধনা জানানো হয় রবীন্দ্রনাথবাবুকে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানও করা হয়। সেখানেই মন্ত্রীর মাথায় ‘সোনার মুকুট’ পরিয়ে দেওয়া হয়। সোনার মালাও দেন দলের কর্মীরা। তা নিয়েই হইচই শুরু হয়েছে। বিরোধীরা বলছেন, “এর মধ্যে দিয়েই বুঝতে হবে শাসক দলের নেতানেত্রীদের মানসিকতা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে।”
রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, ওই মুকুট সোনার জল দিয়ে তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “ওটাকে মুকুট বলা চলে না। তা ছাড়া, পিতলের উপর সোনার জল দিয়ে তৈরি। সংবর্ধনায় অনেকে অনেক কিছু উপহার দেন। ডাউয়াগুড়ি আমার নিজের গ্রাম। সেখানকার ছেলেমেয়েরা ভালবেসে ওই উপহার দিয়েছেন আমাকে।” আয়োজকরা জানান, ওই মুকুট এবং মালা কিনতে সব মিলিয়ে প্রায় দু’লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। মুকুটের খরচ পড়েছে ৯২ হাজারর টাকার উপরে। মালার খরচ পড়েছে ৮২ হাজার টাকার উপরে।
এত টাকা এল কোথা থেকে? ডাউয়াগুড়ি অঞ্চল তৃণমূল নেতা আজিজুল হক বলেন, “রবীন্দ্রনাথবাবুর বাড়ি এই গ্রামেই। এখান থেকেই তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু। তাই গ্রামের সবাই মিলেই কিছু কিছু করে টাকা দিয়ে আমরা মুকুট, মালা কিনে তাঁকে সম্মান জানিয়েছি।”
সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী হওয়ার পরে জেলা জুড়েই রবীন্দ্রনাথবাবুর বেশ কয়েকটি সংবর্ধনা সভা হয়। সেখানে ফুল, শালের চাদর, নানা ধরনের ব্যাগ দেওয়া হয় তাঁকে। সোমবার রবীন্দ্রনাথবাবুকে মুকুট, মালা দেওয়ার পরে বিরোধীরা সঙ্গে সঙ্গে বলতে শুরু করেন, এটা অপসংস্কৃতি। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘মন্ত্রীকে সোনার মুকুট, মালা পরানো হল। তিনিও তা নিয়ে ফেসবুকে শেয়ার করলেন। একটা অপসংস্কৃতির প্রসার ঘটাচ্ছেন শাসক দলের নেতারা।’’ নিখিলবাবুর দাবি, ‘‘মন্ত্রীরা নিজেদের রাজা ভাবছেন।’’ ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সভাপতি পরেশ অধিকারীও জানান, তিনি দীর্ঘ দিন মন্ত্রী থাকলেও কখনও এমন কোনও উপহারের কথা ভাবেননি। তিনি বলেন, “এমন উপহার কেউ দিতে চাইলে, তাঁকে সতর্ক করতাম। এটা কুপ্রথা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy