Advertisement
E-Paper

মিরিক মহকুমা

ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যেই দু’হাত তুলে নাচছেন সরিতা তামাঙ্গ, প্রেমা লামারা। কোথাও রাস্তা জুড়ে কালিপটকা ফাটাচ্ছেন সুন্দর শর্মা, রাজেন ছেত্রীরা। আবার বেগুনি আবির উড়িয়ে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরছেন ভুবন কামি, প্রেম্বা থাপারা।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৭ ০২:০৬
ছন্দে: মিরিকবাসীর তালে হাত মেলাচ্ছেন অরূপও। নিজস্ব চিত্র

ছন্দে: মিরিকবাসীর তালে হাত মেলাচ্ছেন অরূপও। নিজস্ব চিত্র

ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যেই দু’হাত তুলে নাচছেন সরিতা তামাঙ্গ, প্রেমা লামারা। কোথাও রাস্তা জুড়ে কালিপটকা ফাটাচ্ছেন সুন্দর শর্মা, রাজেন ছেত্রীরা। আবার বেগুনি আবির উড়িয়ে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরছেন ভুবন কামি, প্রেম্বা থাপারা। গাড়ি থামিয়ে আবির মাখিয়ে দিচ্ছেন চালকের মুখে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মহকুমা ঘোষণার পরে এমনই উৎসবে মেতে ওঠে দার্জিলিং জেলার সদ্যগঠিত মহকুমা মিরিক।

অনুষ্ঠানের পরে অ্যালে গ্রাউন্ড থেকে মিরিক বাজারে দলের পার্টি অফিসে যাওয়ার মুখে সেই উৎসবের ঢেউয়ে আটকে পড়েন রাজ্যের পূর্ত ও ক্রীড়া যুব কল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তৃণমূলের পাহাড়ের পর্যবেক্ষক অরূপবাবুকে দেখে অত্যুৎসাহীরা গাড়ি থেকে তাঁকে প্রায় টেনেই নামান। জনতার অনুরোধে একটু হলেও নাচগানে সামিল হতে হয় মন্ত্রীকে। তাতে পটকা আরও বেড়ে যায়। আকাশে উড়তে থাকে একের পর এক রঙিন ফানুস।

মহকুমা হওয়ার পরে এমন উৎসবের রেশ কেন?

সাদরে: মিরিককে মহকুমা ঘোষণার মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

যা শোনার পরে নাচ থামিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে পঞ্চাশোর্ধ্ব লোকেন ছেত্রী বলেছেন, ‘‘মেয়ের সার্টিফিকেটে ভুল ছিল। সেটা মহকুমাশাসকের দফতরে সংশোধন করাতে হয়। সেই কাজে এক মাসে পাঁচ বার কার্শিয়াং গিয়েছি। একদিন গিয়ে দেখি সাহেব নেই। আরেক দিন দেখি বড়বাবু আসেননি। এখন আর সে সব ঝঞ্ঝাট নেই। এখানেই এসডিও অফিস হল। তাই নাচছি!’’

উৎসবমুখর মিরিকে অনেকেরই মনের মধ্যে এমন বেদনাময় অভিজ্ঞতা জমে আছে। কারণ, মিরিক থেকে তো সোজা কার্শিয়াং যাওয়া যায় না। হয় সমতল হয়ে, নয়তো দার্জিলিঙের পথে অনেকটা গিয়ে তবেই কার্শিয়াঙের পথ ধরতে হয়। তাতে যেমন সময় লাগে, তেমনই তা খরচসাপেক্ষও। রেশন কার্ড থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স বা আঁধার কার্ড, রেশন কার্ড, জমির সমস্যা— সবেতেই এই ছোটাছুটির অন্ত ছিল না। স্কুল শিক্ষিকা প্রমীলা শর্মা বললেন, ‘‘এসডিও অফিসে কাজ পড়লেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যেতাম। এখন কিছুটা স্বস্তি। তাই উৎসবে মেতেছি।’’

মিরিক পুরসভার ৩ দফার চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাই একসময়ে সিপিএম, পরে জিএনএলএফ ও মোর্চায় ছিলেন। এখন তৃণমূলে সামিল হয়েছেন। তিনি বললেন, ‘‘স্বাধীনতার পর থেকে এই সমস্যার দিকে কেউ নজর দেয়নি। এ বার তার সমাধান হল।’’ এই বলে মিরিকে সকলের পরিচিত ‘এলবি দাজু’ হাসিমুখে ফের মিশে গেলেন নাচগানের ভিড়ে!

Mirik Sub division Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy