আক্রান্ত: আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে গিয়ে আহত পুলিশকর্মী। দিনহাটা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
মুখে কালো কাপড় বাধা দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছিল গ্রামে। শনিবার রাতে সেই দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন পুলিশকর্মীরাও।
পুলিশকে লক্ষ করে দুষ্কৃতীরা এলোপাথাড়ি গুলি-বোমা ছুড়তে শুরু করে। পাল্টা পুলিশও গুলি ছোড়ে। ওই ঘটনায় দিনহাটা পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টর জয়দীপ মোদক সহ ৩ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার সময় পুলিশের চারটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ ৩ জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছে দুটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। বেশ কিছু বাইকও আটক করে পুলিশ। আরও ১২ জনের নাম পেয়েছে পুলিশ। তাঁদের খোঁজে রাতভর দিনহাটায় তল্লাশি চলে।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “দুষ্কৃতীরা ঘোরাফেরা করছে জেনেই অভিযান চালানো হয়। সেই সময় দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। ইতিমধ্যেই কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত কয়েক দিন ধরেই দিনহাটায় দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছিল। বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক সংঘর্ষে গুলি-বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। দু’দিন আগেই গীতালদহের কাছে ওকরাবাড়িতে বোমার আঘাতে এক তৃণমূল সমর্থকের ডান হাত উড়ে যায়। এই অবস্থায় সন্ধের পর থেকে কুড়ি-পঁচিশটি বাইকে মুখে কালো কাপড় বাঁধা দুষ্কৃতীরা ঘুরছিল বলে অভিযোগ। তারা মাঝে মাঝে একটি ফাঁকা জায়গায় শুন্যে গুলি ও বোমা ছুড়ে বাসিন্দাদের ভয় দেখায় বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
গীতালদহে একটি পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও সঙ্ঘবদ্ধ দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে সাহস করেনি তাঁরা। শনিবার সন্ধের পর থেকে একই দৃশ্য শুরু হয়। আতঙ্কে গীতালদহ, হরিরহাট বাজার বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে যায়। দুষ্কৃতীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র আছে জেনে দিনহাটা থেকে পাঁচটি জিপ ও ছোট গাড়ি নিয়ে পুলিশ দুষ্কৃতীদের আটকাতে যায়।
বাজারের কাছেই একটি জায়গায় দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়ে যায়। এরপরেই শুরু হয় গুলির লড়াই। পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় প্রথমটায় তাঁরা পালাতে শুরু করে। সেই সময় তাঁদের ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ।
পরে খবর পেয়ে আরও পুলিশ কর্মী সেখানে গেলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। রাতেই দিনহাটার এসডিপিও-কে উমেশ গণপত সহ জেলা পুলিশের একাধিক কর্তা ঘটনাস্থলে যান।
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “ওই এলাকায় যুব ও তৃণমূলের মধ্যে লড়াই চলছিল। সেই সময় পুলিশ ওখানে গিয়ে লড়াইয়ের মাঝে পড়ে যায়। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ করছি তৃণমূলের হাতে অস্ত্র আছে, এ বার তা প্রমাণিত হল।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, ওই ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়। তিনি বলেন, “তৃণমূলের কেউ ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক সেটা আমরা চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy