Advertisement
E-Paper

রাত নামলেই পাথর-বৃষ্টি

পরপর জঙ্গি হানার ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে। আর তাতে ঘুম উবে গিয়েছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের। বৃষ্টির মধ্যে রেনকোট আর প্লাস্টিকের জুতো পরে বন্দুক হাতে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। নজর নিবদ্ধ সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৬ ০২:১৪
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

পরপর জঙ্গি হানার ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে। আর তাতে ঘুম উবে গিয়েছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের।

বৃষ্টির মধ্যে রেনকোট আর প্লাস্টিকের জুতো পরে বন্দুক হাতে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। নজর নিবদ্ধ সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে। সন্দেহজনক কিছু দেখতে পেলেই চষা খেতে কাদা ঠেঙিয়ে হেঁচড়পেচড় করে ছুটতে হচ্ছে। টর্চের আলো ঘুরিয়ে বারবার নিঃসংশয় হতে হচ্ছে, কেউ নেই তো ওখানে!

এক নজরে কোচবিহারের দীঘলটারি, ছোট গাড়োলঝোরায় কাঁটাতারহীন সীমান্তে এ ভাবেই রাত কাটছে বিএসএফের। এমনকী, রাতেও চোখ থেকে সরছে না দূরবীন। আর দিনের বেলা তো কথাই নেই। একটা সাইকেল, মোটরবাইক বা গাড়ি চলতে পারছে না রক্ষীদের নজর এড়িয়ে। দেখামাত্র ছুটে গিয়ে তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ। কোচবিহার রেঞ্জের বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, “সন্ধে নামলেই চোরা কারবারিরা সীমান্তের দুই পাশে জড়ো হয়। দু’পাশ থেকে পাথর ছুড়তে শুরু করে। আমরা সারা রাত ধরে তাঁদের সঙ্গে লড়াই করি।”

বিএসএফ সূত্রের খবর, জেলার তিন দিক বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঘেরা। এর মধ্যে নাজিরহাটের ছোট গাড়োলঝোরা, দীঘলটারি, গীতালদহের বেশ কিছু এলাকায় নদীপথ এবং মেখলিগঞ্জের বেশ কিছু এলাকায় কাঁটাতার নেই। এই সব এলাকায় রাত নামলেই চোরা কারবারিদের তাণ্ডব শুরু হয়ে যায় বলে অভিযোগ।

আরও অভিযোগ, অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে মানুষও পার হয়ে যায় অক্লেশে। বাংলাদেশে জঙ্গি হানার পরে সীমান্তে এমন পারাপার আটকাতে কঠোর হয়েছে বিএসএফের নজরদারি।

আর তাতেই সমানে ঠোকাঠুকি লাগছে চোরা কারবারিদের সঙ্গে! এক বিএসএফ জওয়ান বলছিলেন, “এই এলাকায় সাপ, পোকামাকড়ে ভর্তি। জঙ্গলও রয়েছে। রাতে তো সে ভাবে কিছুই দেখা যায় না। তার মধ্যেই আমরা হেঁটে নেমে যাচ্ছি খেতের মধ্যে।”

দিনের বেলা তল্লাশির সময় প্রথমেই রক্ষীরা দেখতে চাইছেন পরিচয়পত্র।

এক আধিকারিক বলেন, “এখানে কাঁটাতার নেই। যে কোনও সময় ওপার থেকে দুষ্কৃতীরা ঢুকে পড়তে পারে। আবার কারও মাধ্যমে চোরাই জিনিস পারাপার হতে পারে। তাই পরিচয়পত্র না দেখালে যাতায়াতে অনুমতি দেওয়া হয় না।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন জানান, কাঁটাতার না থাকায় এই সব রুট চোরা কারবারিদের কাছে স্বর্গরাজ্য। সেই রাস্তা বন্ধ করতেই সন্ধে ৬টা থেকে ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত জেগে থাকছেন বিএসএফ জওয়ানরা। সকাল হলে বিশ্রাম নিচ্ছেন পর্যায়ক্রমে।

এই নজরদারির ক্ষেত্রে যাতে সমন্বয়ের অভাব না হয়, যাতে ডাকলেই পুলিশকে হাতের কাছে পায় বিএসএফ, সেই লক্ষ্যে শুক্রবার গীতালদহ সীমান্ত দেখতে যান কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর মধ্যেই জেলার পুলিশকর্তাদের সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখতে বলেছেন। সুনীল যাদব এ দিন বিএসএফের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

সুনীলবাবু এ দিন ঘুরে দেখেন গোটা এলাকা। ধরলা নদীর পথে প্রায় দু’কিলোমিটার কাঁটাতার নেই। সেই পথে চোরা কারবার চলে বলে অভিযোগ। সেখানে স্টিমার চেপে নদী ঘুরে দেখেন এসপি। পরে বলেন, “বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো হয়েছে। সব দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, আপাতত সীমান্তের কাঁটাতারহীন তিন জায়গায় ওয়াচ টাওয়ার বসানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।

nights miscreants
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy