Advertisement
E-Paper

মালদহে দুষ্কৃতীরা ঝুঁকছে বল বোমায়

বাজারে অমিল টিনের ছোট কৌটো। তাই বিপদ থাকলেও মালদহের কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরের দুষ্কৃতীরা ঝুঁকছে বল বোমার দিকে। আর প্রায়ই এই বল বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণ হচ্ছে কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৬ ০৪:৪৭

বাজারে অমিল টিনের ছোট কৌটো। তাই বিপদ থাকলেও মালদহের কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরের দুষ্কৃতীরা ঝুঁকছে বল বোমার দিকে। আর প্রায়ই এই বল বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণ হচ্ছে কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরে।

গত রবিবার বৈষ্ণবনগরের ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘেরা ভগবানপুরে বোমা বাঁধতে গিয়ে চার জনের মৃত্যু এবং পরে সেই বোমা তৈরির বিষ্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বোম স্কোয়াডের দুই কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে নেমে এমনই তথ্য উঠে এসেছে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কাছে। ওই দুই থানা এলাকায় প্রচুর বেআইনি বোমা মজুত রয়েছে বলে দাবি করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।

কংগ্রেস নেতা তথা বিদায়ী বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রচুর বেআইনি বোমা মজুত রয়েছে কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর জুড়ে। ইতিমধ্যে পুলিশ সুপারের কাছে আমরা লিখিত ভাবে জানিয়েছি ওই এলাকা থেকে বেআইনি ভাবে মজুত রাখা বোমা অবিলম্বে উদ্ধার করার জন্য।’’ এই অবৈধ কারবারের পেছনে শাসক দলের নেতাদের একাংশের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘শাসক দলের মদতে বোমা তৈরির কারখানা রমরমা হয়ে উঠেছে জেলাতে। যার জন্য পুলিশ সব জেনেও চুপ রয়েছে।’’

যদিও এই সব ঘটনায় দলের কোনও যোগ নেই বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম জমানাতেও কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগরে বোম তৈরি হত। নতুন কোনও বিষয় নেই। আর যারা তৈরি করছেন তারা দলের কেউ নয়। এটা বিরোধীদের অপপ্রচার।’’ মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বোমা মজুত রয়েছে বলে অভিযোগ আসছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

বৈষ্ণবনগর থানার ভগবানপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় রবিবার রাতে বল বোমা বাঁধতে গিয়ে বিষ্ফোরণে মৃত্যু হয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য কালাম শেখ সহ চারজনের। বোমা বিষ্ফোরণের তীব্রতায় ভেঙে যায় নিবনির্মিত বাড়িও। পরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া দুই ধরনের বিষ্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বিষ্ফোরণে মৃত্যু হয় সিআইডি বম্ব স্কোয়াডের দুই কর্মী বিশুদ্ধানন্দ মিশ্র ও সুব্রত চৌধুরীর। আহত হয়েছেন অপর কর্মী মনিরুজ্জামান শেখও। এই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে সুজাপুরে এক পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের গুদামে বোমা বাঁধতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। সেই সময় বল বোমার কিছু অংশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। বৈষ্ণবনগরে ঘটনাটিতেও বল বোমার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দু’টি তাজা বল বোমা এবং প্রচুর প্লাস্টিকের খালি বল উদ্ধার করেছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক ধরে এই বল বোমার চল বেড়েছে কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর জুড়ে।

জানা গিয়েছে এতদিন পান মশলার ছোট টিনের কৌটোর মধ্যে বারুদ, কাঁচের টুকরো, পাথর, আলপিন ভরে তারপরে সুতলি দিয়ে ভালো করে বেঁধে বোমা তৈরি করত দুষ্কৃতীরা। কৌটো গুলিতে প্রায় ১০০ গ্রাম বারুদ ভরা হত। সম্প্রতি টিনের কৌটো গুলি বাজারে অমিল। যার জন্য বল বোমা তৈরির দিকেই দুষ্কৃতীরা বেশি ঝুঁকছে বলে অভিযোগ।

কীভাবে তৈরি হয় এই বল বোমা? প্লাস্টিকের খেলনা বলকে ব্লেড দিয়ে একপাশে কেটে দেওয়া হয়। তারপরে সাদা রঙের বারুদ দেওয়া হয়। তারপরে কাঁচের টুকরো, পাথর কুচি, আলপিন, কাঁটা মেশানো হয়। দুই ধরনের বারুদ মেশানো হয় প্রায় ২৫ গ্রাম করে। পরে বলের কাটা অংশের মুখে সেলোটেপ দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়। এক কেজি বারুদে ৪০টির মতো বোমা তৈরি হয়।

দুষ্কৃতীদের কাছে এর কদর রয়েছে। তবে এই বোমার ক্ষেত্রে ঝুঁকিও রয়েছে। একটু নাড়া দিলেই ফেটে যায়। এমনকি সামান্য চাপ দিলেই ফেটে যেতে পারে।

Miscreants maldah Bombs
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy