আড়াই বছর আগে অ্যাসিড হামলার ভয়ানক স্মৃতি এখনও শিউরে তোলে মালদহের বৈষ্ণবনগরের তরুণীকে। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার শাস্তি তাঁকে যে এ ভাবে পেতে হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি। শুধু তাই নয়, অ্যাসিড হামলার অব্যক্ত যন্ত্রণা এখনও তাঁকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। ওই হামলার চিহ্ন যেমন তাঁর মুখের বহিরঙ্গে রয়েছে, তেমনই মুখের ভিতরেও অ্যাসিড ঢুকে খাদ্যনালীকেই সংকুচিত করে দিয়েছে। শুধু তরল জাতীয় খাবারই তাঁর বরাদ্দ। সেটাও গিলতে গিয়ে প্রতিদিনই যন্ত্রণায় কাতরান।
কিছু দিন আগে সরকারের তরফে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ মিললেও তাঁর চিকিৎসার পিছনে যা খরচ হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণ তার তিন ভাগের এক ভাগও নয় বলে তরুণী জানিয়েছেন। ধারদেনা করে চিকিৎসা চলছে। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি যা, তাতে চিকিৎসা আরও চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সংসারে রোজগেরে বলতে অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী তাঁর মা। তাই কী ভাবে কী হবে, তা ভেবেই পাচ্ছেন না। তাঁর দাবি, অন্তত একটা সরকারি চাকরি তাঁকে দেওয়া হোক। ওই আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি চিঠিও লিখবেন। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের এখনও সাজাও না হওয়ায় তাঁর ও পরিবারের স্বস্তিও নেই, ক্ষোভে ফুঁসছেন তারা।
মামলার সরকারি আইনজীবী গোলাম গৌসখান লোদি অবশ্য বলেন, মামলাটি মালদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের (ফাস্ট ট্র্যাক ফার্স্ট কোর্ট) আদালতে বিচারাধীন।
কী হয়েছিল আড়াই বছর আগে? তরুণীর পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজ পড়ুয়া ওই তরুণীকে রাস্তাঘাটে প্রায়ই উত্যক্ত করত বৈষ্ণবনগরের বাঙালিপাড়ার যুবক উজ্জ্বল মণ্ডল। অভিযোগ, ওই যুবক প্রেমের প্রস্তাবও দেয় ওই তরুণীকে। কিন্তু তিনি রাজি হননি। সে দিন ছিল ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। সন্ধে ৭টা নাগাদ তরুণী ও তাঁর মা দু’জনে সাটাঙ্গাপাড়ার নিজের বাড়িতেই ছিলেন। অভিযোগ, সে সময় দলবল ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয় ওই যুবক। এরপর ঘরে ঢুকে ওই তরুণীর মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মারে। পরে তাঁকে কলকাতার এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হন। কিন্তু অ্যাসিড তাঁর মুখমণ্ডলের একাংশ বিকৃত করে দেওয়ার পাশাপাশি খাদ্যনালীকে সঙ্কুচিত করে দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy