Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘কোরাম’ হয়নি, দু’শো মামলা ঝুলে দার্জিলিং জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট যোগ্যতামান অনুসারে সমাজকর্মীদের মধ্যে থেকে জুভেনাইল বোর্ডের সদস্যের জন্য আবেদন পত্র চাওয়া হয়। তার ভিত্তিতে ইন্টারভিউ নিয়ে নিয়োগ হয়।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

শুভঙ্কর চক্রবর্তী 
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৩৫
Share: Save:

প্রায় দু’বছর হল আটকে রয়েছে দার্জিলিং জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সদস্য নিয়োগের প্রক্রিয়া। সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বোর্ডের মোট সদস্য তিন জন। বর্তমানে বোর্ডে রয়েছেন শুধু প্রিন্সিপ্যাল ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু আইন অনুসারে কোনও মামলার বিচার বা রায়দানের ক্ষেত্রে ‘কোরাম’ হওয়ার জন্য ন্যূনতম দুই সদস্যের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। ফলে প্রিন্সিপ্যাল ম্যাজিস্ট্রেট থাকলেও দুই বছর ধরে কার্যত অকেজো অবস্থাতেই পরে আছে বোর্ড। দার্জিলিং বোর্ডের উপর কালিম্পং জেলারও বাড়তি দায়িত্ব রয়েছে। দুই জেলার দুশোটিরও বেশি মামলা ঝুলে রয়েছে। ফলে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে পাহাড়ে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট যোগ্যতামান অনুসারে সমাজকর্মীদের মধ্যে থেকে জুভেনাইল বোর্ডের সদস্যের জন্য আবেদন পত্র চাওয়া হয়। তার ভিত্তিতে ইন্টারভিউ নিয়ে নিয়োগ হয়। বোর্ডের সদস্যদের কার্যকালীন মেয়াদ হয় তিন বছর। আগে জেলা স্তরেই নিয়োগ কমিটি তৈরি হত। বর্তমানে রাজ্য স্তরে কমিটি করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পুরো বিষয়টি দেখভাল করে রাজ্য সমাজকল্যাণ দফতর। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বোর্ডের দুই সদস্যের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ এক বছর নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ফাঁকা পরে আছে গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ।

জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, পকসো আইনের মামলার ক্ষেত্রে যদি অভিযুক্তও নাবালক বা নাবালিকা হয় সেক্ষেত্রে তাঁর বিচার হবে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে। পকসো মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আদালতগুলিতে বিশেষ বিচারের ব্যবস্থা আছে বলেই রাজ্য বার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে। অথচ জুভেনাইল বোর্ডের নিয়োগ আটকে থাকায় পাহাড়ের দুই জেলার বেশ কয়েকটি পকসো মামলার বিচারও থমকে গিয়েছে।

দীর্ঘদিন থেকে দার্জিলিংয়ে শিশু কল্যাণ কমিটি (সিডব্লুউসি) নেই। কবে নতুন কমিটি গঠিত হবে তা সঠিক ভাবে বলতে পারছেন না সমাজকল্যাণ দফতর বা জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরাও। এই পরিস্থিতিতে জুভেনাইল বোর্ডের বিচার থমকে থাকায় পাহাড়ে শিশু সুরক্ষা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন।

দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল এইড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন, ‘‘দার্জিলিংয়ের যা পরিস্থিতি তাতে শিশু সুরক্ষার নামে চলতে থাকা আইনগুলি জেলায় থাকা আর না থাকা সমান। দুই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা অকেজো হয়ে থাকায় শিশুদের অধিকার খর্ব হচ্ছে। সংস্থাগুলি কাজ করতে পারছে না কেবল প্রশাসনিক গাফিলতির কারণে। দ্রুত পদক্ষেপ করা জরুরি।’’ দার্জিলিংয়ের সমাজকল্যাণ আধিকারিক বাণী লামা বলেন, ‘‘সমস্যার কথা জানি। তবে নিয়োগের বিষয়গুলি এখন সবটাই কলকাতা থেকে দেখা হয়। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সবই জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Darjeeling Juvenile Justice Board Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE