আহত সাহেরা বিবি।— নিজস্ব চিত্র
বাড়ির পাশে বসানো মদের ঠেকে চলছিল হল্লা ও গালিগালাজ। তারই প্রতিবাদ করেছিলেন মা ও ছেলে। এরই জেরে আক্রান্ত হলেন তাঁরা। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে পুরাতন মালদহের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর গ্রামে। অভিযোগ, হামলাকারীরা ওই মহিলাকে মারধর করার পাশাপাশি ছেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। দুজনকেই রাতে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। ওই ঘটনায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মালদহ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে. অভিযুক্তরা পলাতক.
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাহাপুরের রায়পুরে বাড়ি ক্ষুদ্র চাষি মফিজউদ্দিন শেখের। তাঁর স্ত্রী সাহেরা বিবি। তাঁদের তিন ছেলে মেয়ে। অভিযোগ, এলাকার কিছু যুবক তাঁদের বাড়ির পাশে প্রায় দিনই রাতের দিকে মদের ঠেক বসায়। অনেক রাত অবধি সেই ঠেক চলে। সেই ঠেক থেকে চলে অশ্রাব্য গালিগালাজ। মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ সেই ঠেক বসেছিল। সে সময় বাড়িতে ছিলেন না মফিজউদ্দিন। সেই ঠেক থেকে গালিগালাজের পাশাপাশি জোর হল্লাও চলছিল। মফিজউদ্দিনের মেজ ছেলে তাসিকূল শেখ পুরাতন মালদহের ওসমানিয়া হাই মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণির ছাত্র। সামনে মাদ্রাসার পরীক্ষা থাকায় সে সময় সে বাড়িতে পড়াশোনা করছিল। কিন্তু গালিগালাজ ও হল্লার জেরে লেখাপড়ায় বারবারই ব্যাঘাত ঘটছিল। তাসিকূল বলে, ‘‘আমি মাকে বলি মদের ঠেকের হল্লার জেরে পড়তে পারছি না।’’
তাসিকুল।
সাহেরা বিবি তখন ওই মদের ঠেকের কাছে গিয়ে হল্লার প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে আমি গিয়ে ওই মদের আসরে বসা যুবকদের হল্লা ও গালিগালাজ বন্ধ করতে বলি। কিন্তু তারা বন্ধ তো করেইনি, উল্টে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা শুরু করে এবং আচমকা মারধর দিতে থাকে। আমাকে বাঁচাতে আমার মেজ ছেলে তাসিকূল এলে তাঁকেও হামলাকারীরা মারধরের পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কোপ দেয়। ছেলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে. এরপরই হামলাকারীরা এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। আমাদের আর্ত চিতকারে প্রতিবেশীরা এসে উদ্ধার করে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করে।’’
সাহেরা বিবির দাবি, ওই ঘটনায় তিনি এলাকারই রাজু শেখ, জামিরুল শেখ সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মালদহ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন. তিনি বলেন, ‘‘আমি চাই আমাদের এলাকা থেকে মদের ঠেক পুলিশ বন্ধ করুক। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিক। ওই সাহাপুরেরই বাসিন্দা মালদহের বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ হালদার। তিনি বলেন, ‘‘কিছু মানুষ মদের ঠেক বসিয়ে এলাকার পরিবেশকে নষ্ট করছে। পুলিশের উচিত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও মদের ঠেকগুলিকে বন্ধ করা।’’
মালদহ থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ঘটনার পরই গা ঢাকা দিয়েছে. তাঁদের খোঁজ চলছে. পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy