প্রতীকী চিত্র।
স্রেফ তোলাবাজির প্রতিবাদ, না এলাকার কর্তৃত্ব বজায় রাখা নিয়ে দলের অন্দরের গোষ্ঠী কোন্দল? না কি অন্য কিছু? পঁচিশ বছরের তরতাজা যুবক তুষার বর্মনের মৃত্যুর পিছনে কারণ কী, তা নিয়েই এখন আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন মহলে চলছে জোর জল্পনা। যদিও কারণ খুঁজতে গিয়ে দলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন বিরোধীরা। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য তা খারিজ করে দিয়েছেন।
কিন্তু এলাকার অনেকের দাবি, ২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসতেই এলাকার তৃণমূলের অন্দরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। উত্থান হয় নতুন নতুন তৃণমূল নেতাদের। আর তখনই আদি বা পুরানো তৃণমূলের নেতারা ধীরে ধীরে কোণঠাসা হতে শুরু করে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কারও কারও কথায়, আদি তৃণমূল হলেও এলাকায় বেশ নাম-ডাক থাকায় তুষারকে দলের অন্দরে কোণঠাসা করা খুব একটা সহজ ছিল না। আর তা থেকেই নব্য তৃণমূলের নেতাদের একাংশের সঙ্গে তুষারের বিবাদের শুরুটা হয়েছিল বলে মত কারও কারও। ক্রমেই তুষারের বিরোধীরা ব্লক নেতৃত্বের কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সহকারী বুথ সভাপতির পদও গিয়েছে তুষারের।
তবে তুষারের পরিবারের লোকেরা অবশ্য বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে অভিযুক্ত উপপ্রধান শম্ভু রায়, পঞ্চায়েত সদস্য সোনা রায়দের তোলাবাজিকে। তাদের অভিযোগ, তুষার শুরু থেকেই এই তোলাবাজির প্রতিবাদ করতেন। যাতে সমস্যায় পড়তে হয় অভিযুক্তদের। সে জন্যই তাঁকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছে তাঁরা। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য তোলাবাজির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের ঠিক কারণ জানতে মঙ্গলবার রাতে তপসিখাতা বাজার বা জয় বাংলা হাটে ঠিক কী ঘটেছিল, সেই প্রশ্নেরও উত্তর খোঁজা হচ্ছে।
তুষারের এক বন্ধু দাবি করেন, মঙ্গলবার রাতে তপসিখাতা বাজারে মারধর করা হচ্ছিল তপন রায়কে। তপন তুষারের দূর সম্পর্কের ভাই। তপনের ফোন পেয়েই তুষার ঘটনাস্থলে যান বলে দাবি। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই চুপ তুষারের সেই ভাই তপন। বনচুকামারির ফোসকাডাঙার বাড়িতে গিয়েও এদিন তাঁর দেখা মেলেনি। তপনের স্ত্রী বুলাদেবী বলেন, “মঙ্গলবার ঘটনার পরে রাতে ফিরে আমার স্বামী শুধু এটুকুই জানান, তাঁকে কয়েকজন মারধর করেছে। তুষারকে গুলি করেছে। তারপরই কাঁদতে শুরু করে। কী কারণে এই মারধর তা নিয়ে কিছু বলেননি। এদিন সকালে আমি তুষারের বাড়িতে গেলে তিনিও বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।”
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।” তবে তৃণমূলের নেতারা অবশ্য এই খুনের পেছনে গোষ্ঠীকোন্দলের কথা মানতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy