নেই পারস্পরিক দূরত্ববিধি। রাস মেলার ভিড়ে মাস্কও নেই অধিকাংশের মুখে। মঙ্গলবার কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র।
রাস মন্দিরের সামনে যেন জনস্রোত। মেলার মাঠে ঘিঞ্জি দোকান। তার মধ্যেই ঠাসাঠাসি করে ঘুরছে সবাই। কেউ নাগরদোলায় উঠছেন। কেউ সার্কাস দেখছেন। কেউ আবার ঢুকছেন খাবারের দোকানে। সারি সারি মুখ, যার অধিকাংশই মাস্কবিহীন। স্যানিটাইজ়ার তো দূরস্থান, হাত না ধুয়েই কেউ কেউ বসে পড়ছেন খাবার টেবিলে। আর ঠিক পাশেই নাগাড়ে মাইকে চলছে প্রচার, “কোভিডবিধি মেনে চলুন। মেলা উপভোগ করুন।”
করোনার নতুন রূপ ওমিক্রন আতঙ্ক চলছে বিশ্বজুড়ে। যদিও সেই আতঙ্ক ছায়া মাত্র ফেলতে পারেনি কোচবিহারের রাস মেলার বেপরোয়া উল্লাসে। এ দিকে, প্রশাসনের তরফে সমানে চলছে প্রচার। সচেতনামূলক নাটক। তবে সে দিকে দৃষ্টি বা কর্ণপাত করছেন না কেউই। জিজ্ঞেস করলে বলছেন, “কই কোভিড তো নেই।” কেউ আবার বলছেন, “টিকা নিয়েছি তো। এখন আর হবে না।” দুর্গাপুজো-কালীপুজোয় সংক্রমণ বেঁধে রাখতে পারলেও রাসমেলার পরে কী হবে? তা নিয়েই এখন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের মধ্যে।
প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে কোচবিহার জেলায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কোভিড। নতুন করে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দীর্ঘ সময় ধরে ২০ জনের উপরে উঠছে না। এ ছাড়া আক্রান্তরা দ্রুত সুস্থও হচ্ছেন। নতুন করে মৃত্যুর খবর নেই। তার পরেও অবশ্য নিয়মিত রাসমেলা চত্বরে মাস্ক বিলি, নাটক-গানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজ চলছে। কোচবিহার সদরের মহকুমাশাসক রাকিবুর রহমান বলেন, “সবাই যাতে রাসমেলায় কোভিড বিধি মেনে চলেন সে জন্য নজরদারির পাশাপাশি সচেতনতামূলক প্রচারও করা হচ্ছে।” রাসমেলার মঞ্চে করোনা সচেতনতা নিয়ে ছোট্ট নাটক পরিবেশন করা হয়েছে। যার দায়িত্বে ছিলেন কোচবিহার জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরের ডেপুটি পিডি ত্রিদিব সর। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষকে সচেতন করার সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।” তবে তাতে কতটা কাজ হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
কোভিড পরিস্থিতিতে গত বছর রাসমেলা হয়নি। এ বার দিন কয়েকের আলোচনার পরে রাসমেলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। প্রথম থেকেই কোভিড নিয়ে বার্তা দিতে শুরু করে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। মেলার মধ্যেই কোভিড পরীক্ষা এবং টিকাকেন্দ্র তৈরি করা হয়। সেই সঙ্গে মেলার মাঠে নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজ করে গিয়েছেন প্রশাসনের আধিকারিক ও কর্মীরা। দিন যত এগিয়ে গিয়েছে ততই ভিড় বাড়তে শুরু করে মেলায়। সেই সঙ্গেই কোভিডবিধি না মানার প্রবণতা বেড়েছে বলে অভিযোগ। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেছেন, “শেষ কয়েক দিন মেলায় ভিড় বেশি হয়। এই সময়ে নজরদারিতে আরও জোর দেওয়া হবে।” আজ রাস মেলার সময়সীমা আরও চার দিন বাড়ানো হল। আগামী ৬ তারিখ পর্যন্ত চলবে এই মেলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy