প্রতীকী চিত্র
জল্পেশে কিশোরী খুনে এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে মৃতার পরিচিত এক যুবক-সহ মোট তিনজনের নামে ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগও দায়ের করে কিশোরীর পরিবার। তবে বুধবার পর্যন্ত তাদের কাউকেই পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছে। তবে খুব তাড়াতাড়ি তারা ধরা পড়বে।’’
মঙ্গলবার ময়নাগুড়ির জল্পেশ মন্দির সংলগ্ন মেলার মাঠ থেকে উদ্ধার হয় ওই কিশোরীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। দেহটি ময়নাতদন্তের পর বুধবার সন্ধেয় তাঁর গ্রামে নিয়ে আসা হয়। ময়নাগুড়ির হেলাপাকড়ি গ্রামের বৈকুর গৌরগ্রাম এলাকার ওই কিশোরী খুন হয়েছে বলে তাঁর পরিবারের দাবি। বুধবার সন্ধেয় কিশোরীর মামা বলেন, ‘‘এমনিতেই মেয়েটির মা শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন। তাই ক্ষতবিক্ষত দেহটি এ দিন আমরা আর বাড়ি নিয়ে যাইনি। হেলাপাকরি বাজারের কাছে শ্মশানেই দাহ করা হয়েছে মৃতদেহটি।’’ ওই কিশোরী মায়ের হাহাকার, ‘‘শেষ বারের মত মেয়েটির মুখও আমি দেখতে পেলাম না। ভাবিনি এভাবে ওকে কেউ আমার বুক থেকে কেড়ে নেবে।’’
হেলাপাকড়ি বাজারের উপরেই তৃণমূলের পার্টি অফিস। মেয়েটির দেহ গ্রামে নিয়ে আসার আগাম খবর পেয়ে এ দিন বিকেল থেকেই পার্টি অফিসে জড়ো হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা কর্মীরা। সেখানে দাঁড়িয়ে এলাকার তৃণমূল নেতা পবন সরকার বলছিলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকালে দেহটি উদ্ধার হয়েছে। ওই দিন বিকেলেই এফআইআর হয়েছে। অথচ চিন্তার বিষয় হল এখনও আসামীরা ধরা পড়েনি।’’ মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ডেন্ডুপ শেরপা ও ডিএসপি ক্রাইম মানবেন্দ্র দাস-সহ ময়নাগুড়ি থানার পুলিশকর্মীরা অভিযুক্তদের খোঁজে তাদের বাড়িতে যান। মৃতার পরিবারের সঙ্গে গিয়েও দেখা করেন। ময়নাগুড়ি থানার আইসি নন্দকুমার দত্ত বলেন, ‘‘ঘটনায় মূল অভিযুক্ত যুবক ময়নাগুড়ির বাশিলারডাঙার বাসিন্দা। তার মাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। অভিযুক্তদের মোবাইল টাওয়ার লোকেশন থেকে তাদের অবস্থান জানারও চেষ্টা চলছে।’’
মঙ্গলবার ওই কিশোরীর পরিবার দাবি করেছিল, শুক্রবার নিখোঁজ হওয়ার আগে মেয়েটির কাছে একটি মোবাইল ছিল। মেয়েটির গলায় একটি সোনার মালা এবং আংটি ছিল। কিন্তু পুলিশ মৃতদেহের কাছ থেকে এসব কিছুই পায় নি। পুলিশ সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, মেয়েটি যে নম্বর ব্যবহার করত সেই নম্বর থেকে শুক্রবার কোথায় কোথায় ফোন গিয়েছিল বা কারা ওই নম্বরে ফোন করেছিল তা বের করা হয়েছে। ওই নম্বরগুলো কাদের তা খোঁজ করা হচ্ছে। ফলে খুব শীঘ্রই অপরাধীদের নাগাল পাওয়া সম্ভব হবে বলে পুলিশের দাবি।
ওই কিশোরীর দাদা রায় বলেন, ‘‘আমার বোনকে ভুল বুঝিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। যদিও তাড়াহুড়োয় এফআইআরে ধর্ষণ কথাটা উল্লেখ করিনি। কিন্তু আমরা নিশ্চিত ওকে নির্যাতন করা হয়েছে। এরপর খুন করে ওর মুখ অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে কেউ তাকে চিনতে না পারে।’’ পুলিশের এক তদন্তকারী অফিসার স্বীকার করেন, কিশোরীর দেহটি উদ্ধারের সময় তার পরনের পোশাকে চাপ চাপ রক্ত ছিল। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কেউই এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy