Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Black Nunia Rice

‘জিআই’-স্বীকৃতি পেল কালো নুনিয়া

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, কালো নুনিয়া ধান কালো রঙের। সুগন্ধি ওই ধানের চাল ফোটালে, ঝরঝরে সুস্বাদু ভাত হয়। এ ছাড়া, পায়েস তৈরিতেও কদর রয়েছে ওই চালের।

কালো নুনিয়া চাল।

কালো নুনিয়া চাল। —নিজস্ব চিত্র।

অরিন্দম সাহা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:১৫
Share: Save:

গোবিন্দভোগ, তুলাইপাঞ্জি চাল ‘জিআই’ স্বীকৃতি পেয়েছিল আগেই। এ বার সে তালিকায় যুক্ত হল উত্তরবঙ্গের ‘প্রিন্স অফ রাইস’ কালো নুনিয়াও। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্টেট এগ্রিকালচারাল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের তরফে ‘জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন’ বা ‘জিআই’ স্বীকৃতির জন্য আবেদন জানান হয়েছিল। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে, সে স্বীকৃতি মিলেছে। নতুন বছরের শুরুতে ওই স্বীকৃতিতে আশার আলো দেখছেন উত্তরের কৃষি মহলের অনেকেই।

উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রদ্যুৎকুমার পাল বলেন, “কালো নুনিয়ার জিআই স্বীকৃতি মিলেছে। উত্তরবঙ্গের কৃষিসম্পদ রক্ষার ক্ষেত্রে এই স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে একটি মাইলফলক।” উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বীজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক বিধান রায় বলেন, “অন্তত পাঁচ বছর আগে, থেকে কালো নুনিয়ার জিআই স্বীকৃতির চেষ্টা হচ্ছিল। গোবিন্দভোগ, তুলাইপাঞ্জির মতো কালো নুনিয়া চাল এক গুরুত্বপূর্ণ তালিকায় যুক্ত হল। এটা দারুণ প্রাপ্তি।”

ওই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, কালো নুনিয়া ধান কালো রঙের। সুগন্ধি ওই ধানের চাল ফোটালে, ঝরঝরে সুস্বাদু ভাত হয়। এ ছাড়া, পায়েস তৈরিতেও কদর রয়েছে ওই চালের। এক সময় কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের বিস্তীর্ণ এলাকায় তো বটেই, উত্তর দিনাজপুরের কিছু জায়গায় কালো নুনিয়া ধানের ভাল রকম চাষ হত। কিন্তু গড়ে ওই ধান চাষে বিঘা প্রতি ছয়-সাত মন ফলন হয়, অন্য ধানের ক্ষেত্রে যা ১৩-১৫ মন। মূলত, বিঘা প্রতি তুলনামূলক কম ফলনের জন্য ওই ধান চাষের এলাকা কমেছে। তবে বাংলার নিজস্ব ‘সম্পদ’ হিসাবে ওই চাষ এখনও অনেকে করেন। জলপাইগুড়ি জেলায় মোট ১,৪৫০ হেক্টর জমিতে কালো নুনিয়া ধানের চাষ হয়। সব থেকে বেশি চাষ হয় বানারহাট ব্লকে। সেখানে ওই ধানের চাষ হয় প্রায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে।

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, ‘জিআই’ তকমা পেতে ফলনটি সংশ্লিষ্ট এলাকার স্বতন্ত্র উৎপাদন বলে যেমন বোঝাতে হয়, তেমনই ওই উৎপাদনের সঙ্গে জনজীবনের যোগসূত্র তুলে ধরতে গবেষণা করে এগোতে হয়।

কোচবিহারের একটি ফার্মার্স ক্লাবের সম্পাদক অমল রায় বলেন, “কালো নুনিয়ার জিআই স্বীকৃতিতে উত্তরের এই সম্পদের বিশ্বব্যাপী প্রচারের দরজা খুলে গেল। চাষিরা লাভবান হবেন।” জলপাইগুড়ির উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) বৃন্দাবনচন্দ্র রায় বলেন, “প্রত্যেকের সম্মিলিত প্রয়াসে এসেছে সাফল্য।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar GI Tag
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE