আগামী মাসেই বিয়ে একমাত্র মেয়ের। বাড়িতে চলছে তোড়জোড়। তার পরেও কাজের খাতিরে নয়ডা থেকে উত্তরবঙ্গে এসেছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সন্দীপ চৌধুরী (৫৭)। রেললাইনে চলে আসা হাতির ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু রোখার ব্যবস্থা (ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম বা আইডিএস) পরীক্ষা করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার কুনকি হাতির আক্রমণে তাঁর মৃত্যুর পরে, সাময়িক ভাবে সে কাজ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উত্তর-পূর্ব সীমন্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের কর্তারা।
আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম অমরজিৎ গৌতম শুক্রবার বলেন, “ওই ঘটনার পরে কিছু দিনের জন্য কাজ স্থগিত থাকবে। তবে আগামী দিনে এই কাজ জঙ্গলপথে সর্বত্রই হবে।”
বন কর্তাদের একাংশ জানান, এই মুহূর্তে এ ধরনের কাজের পরীক্ষায় রেলকে কুনকি হাতি দেওয়া হবে না। তবে যেহেতু কাজটাই হচ্ছে হাতিদের সুরক্ষায়, ফলে রেল চাইলে দীর্ঘদিন হাতি দেওয়া বন্ধ রাখা কঠিন। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা অপূর্ব সেন বলেন, “বিষয়টি নিয়ে রেলের সঙ্গে কথা বলা হবে।” ঘটনার চব্বিশ ঘণ্টা পরেও কেন রেল বা বন দফতরের তরফে এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ডিআরএম বলেন, “বন দফতর আমাদের থেকে একটি রিপোর্ট চেয়েছে। তা তৈরি হচ্ছে।” বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা জানান, ঘটনাটি নিয়ে তাঁরাও রিপোর্ট তৈরি করছেন, যা রাজ্য পাঠানো হবে।
বন দফতর সূত্রের খবর, সন্দীপের মৃত্যু হয় যে কুনকি হাতিটির আক্রমণে, সেটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছ। বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে, তার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি।
সন্দীপের ভাই সুরেশ চৌধুরী বলেন, “বাড়িতে ভাইঝির বিয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। দাদা বলেছিলেন, আলিপুরদুয়ারে কাজ শেষ হলেই নয়ডায় ফিরবেন। এক নিমেষে সব শেষ হয়ে গেল!’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)