Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
Bangladesh Crisis

ছেলেমেয়ে ঘরছাড়া! ভিসার মেয়াদও শেষ হওয়ার আগে এ পারের সন্তানদের ছেড়ে বাংলাদেশ যাত্রা বিনোদিনীর

বাংলাদেশে বিনোদিনীর বাড়ি। বৃদ্ধার এক ছেলে যোগেন মোহন্ত বছর ৪০ আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসেন। ২৬ বছর আগে এক মেয়ে মাধবীর বিয়ে হয় জলপাইগুড়ি জেলার জোরপাকড়ি এলাকায়।

binodini

বিনোদিনী মোহন্ত। —নিজস্ব চিত্র।

নয়ন চক্রবর্তী
চ্যাংরাবান্ধা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৪ ১৮:৩৭
Share: Save:

সীমান্তের এক প্রান্তে দুই সন্তান। অপর প্রান্তে রয়েছেন আরও দুই সন্তান। কাঁটাতারের বেড়ায় বিচ্ছিন্ন একই পরিবারের সদস্যেরা। ভারতে থাকা এক ছেলে এবং এক মেয়েকে ছেড়ে মঙ্গলবার চোখের জল ফেলতে ফেলতে বাংলাদেশে আর এক ছেলের কাছে রওনা হলেন বৃদ্ধা মা। বাংলাদেশে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সন্তান-সন্ততি কেমন আছেন, জানেন না। আবার কবে ভারতে থাকা দুই সন্তানের কাছে আসতে পারবেন, জানা নেই। বুকভরা আতঙ্ক, চিন্তা আর উদ্বেগ নিয়ে কোচবিহারের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার সময়ে হাপুস নয়নে কাঁদলেন ৮৫ বছরের বিনোদিনী মোহন্ত।

বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার জলঢাকা থানা এলাকায় বিনোদিনীর বাড়ি। বৃদ্ধার এক ছেলে যোগেন মোহন্ত বছর ৪০ আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসেন। ২৬ বছর আগে বিনোদিনীর এক মেয়ে মাধবীর বিয়ে হয় জলপাইগুড়ি জেলার জোরপাকড়ি এলাকায়। ২৮ দিন আগে বিনোদিনী বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। এ দেশে থাকা ছেলে-মেয়ে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু, বাংলাদেশে উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে বাড়ির জন্য মন কেমন করছে বৃদ্ধার। খবর নেওয়া শুরু করেন পরিবারের। বৃদ্ধার কথায়, ‘‘ওরা ভাল নেই। লুকিয়ে লুকিয়ে দিন কাটছে ওদের। নিজেদের বাড়িতে ঢুকতে পারছে না।’’ এ দিকে বৃদ্ধারও ভিসার মেয়াদ শেষ। বিপদ থাকলেও উপায় নেই। মঙ্গলবার বাংলাদেশ যেতে হবে। বাড়ি ফেরার আগে আতঙ্ক গ্রাস করেছে বৃদ্ধাকে। কেঁদে ফেললেন দুই সন্তানও।

অশীতিপর বৃদ্ধা কাঁদতে কাঁদতে পর ক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে এসেছি। নিয়ম মেনে যেতে হবে। ভিসার মেয়াদ শেষ।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বাংলাদেশ ভাল নেই। ও দেশে আমার বাড়ি। ওখানে এক ছেলে, এক মেয়ে আছে। তারা ভাল নেই। লুটপাট হচ্ছে বাড়িতে। আমার ছেলে এবং মেয়ে তাদের পরিবার নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু আমার উপায় নেই। যেতেই হবে।’’

মাকে ছাড়তে এসে এ দেশে থাকা যোগেন বলেন, ‘‘চিকিৎসার জন্য মা এসেছিল। ভিসার মেয়াদ শেষ। তাই উপায় নেই। মাকে পাঠাতেই হবে বাংলাদেশে। দুশ্চিন্তায় রয়েছি। কিন্তু আমরা অসহায়। তাই ইচ্ছা থাকলেও মাকে কাছে রাখার উপায় নেই আমাদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Bangladeshi Cooch Behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE