পাশাপাশি: কোচবিহারে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বাড়িতে পার্থপ্রতিম রায়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘ সময় পরে কাকা রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বাড়িতে গেলেন ভাইপো পার্থপ্রতিম রায়। মঙ্গলবার সকালে কোচবিহার শহরের নতুন পাড়ায় রবীন্দ্রনাথের বাড়িতে যান পার্থ। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা রাজনীতিতে কাকা-ভাইপো নামেই পরিচিত তাঁরা। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময়ে রবীন্দ্রনাথের খুবই কাছের ছিলেন পার্থ। পরে
দু'জনের বিরোধ তীব্র আকার নেয়। এমনকি অনেকেই দাবি করেন, দু’জনের মধ্যে কথা বন্ধ হয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথকে একটি মিটিংয়ে হাতজোড় করে বলতে শোনা যায়, “আর যেন আমাকে কেউ কাকা না ডাকে।” অবশেষে এ বার বরফ গলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। শুধু রবীন্দ্রনাথ নয়, তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করেন পার্থ। দু’জনেই অবশ্য বিরোধের কথা মানতে চাননি।
পার্থপ্রতিম বলেছেন, “দ্বিতীয় বার দায়িত্ব পেয়ে আমি অভিভাবকদের আশীর্বাদ নিচ্ছি। আজ কাকার বাড়িতে গিয়েছিলাম। আর মতান্তর হয়নি। আগামিদিনে আমরা সবাই মিলে দলকে শক্তিশালী করে তুলব।” রবীন্দ্রনাথ বলেন, “পার্থ এসেছিল। শুভেচ্ছা জানিয়েছি।”
২০১৬ সালের উপনির্বাচনে কোচবিহারের সাংসদ হয়েছিলেন পার্থপ্রতিম। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, সে সময় রবীন্দ্রনাথের সঙ্গেই সব সময় দেখা যেত তাঁকে। সাংসদ হওয়ার পরে কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই দু’জনের সম্পর্কে ফাটল ধরে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পার্থপ্রতিমকে টিকিট না দিয়ে পরেশ অধিকারীকে টিকিট দেয় দল। লোকসভায় কোচবিহার আসনে হারের পর রবীন্দ্রনাথকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। দায়িত্ব দেওয়া হয় বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে। পার্থপ্রতিমকে করা হয়
কার্যকরী সভাপতি। কিছু দিন পরে পার্থকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ-পার্থপ্রতিম বিরোধ তুঙ্গে উঠে যায়। দফায় দফায় তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব এসেও সেই বিরোধে রাশ টানতে পারেনি। পরে
পার্থপ্রতিমকে জেলা সভাপতি করা হয়। কোচবিহার তৃণমূল আড়াআড়ি ভাবে বিভক্ত হয়ে যায়।
এ বারের বিধানসভাতেও কোচবিহারে খারাপ ফল করে তৃণমূল। জেলার ৯ টি আসনের মধ্যে ৭ টি চলে যায় বিজেপির দখলে। পরে উপনির্বাচনে দিনহাটায় জয়ী হয় তৃণমূল। পার্থপ্রতিমকে সরিয়ে এ বার জেলা সভাপতি করা গিরীন্দ্রনাথ বর্মণকে। ছয় মাস কাটতে না কাটতেই আবারও পার্থপ্রতিমকে জেলা সভাপতি করা হয়। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ বারে দু’জনকেই একসঙ্গে চলার জন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy