Advertisement
E-Paper

রোগীর মৃত্যুতে তাণ্ডব

বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতাল।

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৩:০৭
শোক: চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে মৃত্যুর অভিযোগ। মানিকচকে। নিজস্ব চিত্র

শোক: চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে মৃত্যুর অভিযোগ। মানিকচকে। নিজস্ব চিত্র

বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতাল। মঙ্গলবার সকাল থেকে কয়েক দফায় বিক্ষোভ দেখান মৃতের আত্মীয় পরিজনেরা। অভিযোগ, ঘটনায় কর্তব্যরত এক চিকিৎসককে মারধরও করা হয়। এমনকী, পুলিশের সামনেই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভাঙচুর চালানো হয় বলেও অভিযোগ। মানিকচক থানা থেকে বাড়তি পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ঘটনায় দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন মানিকচক থানায়। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম লতিকা মহালদার (৩১)। তাঁর স্বামী হিরো পেশায় মাছ বিক্রেতা। তাঁদের তিন ছেলে-মেয়ে রয়েছে। মানিকচক থানার মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধনরাজ গ্রামের বাসিন্দা তাঁরা। গত, সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে লতিকাকে মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের লোকেরা। সেই সময় চিকিৎসক স্যালাইন দেন। পরিবারের দাবি, জানানো হয় রোগীর শারীরিক অবস্থা ভাল রয়েছে।

আচমকা রাত দেড়টা থেকে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। অভিযোগ, কর্তব্যরত চিকিৎসক রথীন দাসকে একাধিক বার ডাকতে গেলেও তিনি যাননি। অক্সিজেন দিতেও গড়িমসি করা হয়। প্রথমে সাধারণ কর্মীদের দিয়ে রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে কর্তব্যরত নার্সেরা গিয়ে রোগীকে অক্সিজেন। ঘন্টা খানেক বাদেই মৃত্যু হয় লতিকার। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর আত্মীয় পরিজনেরা। রাতেই হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। যদিও অন্যান্য রোগীদের আত্মীয় পরিজনদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

মৃতার পরিবারের দাবি, ওইদিনই সকালে লতিকাকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। সেই সময় চিকিৎসক কিছু ওষুধ দিয়েই ছেড়ে দেন। রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুরো ঘটনায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে এদিন সকাল ন’টা থেকেই ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, প্রসুতি বিভাগে ভাঙচুর চালানো হয়। এমনকি, কর্তব্যরত চিকিৎসক রথীনবাবুকেও মারধর এবং হেনস্থা করা হয়। ঘটনায় মহিলারাও চড়াও হন। বাড়তি পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

মৃতার দাদা রঞ্জিত মন্ডল বলেন, “রাতে বলা হয় বোনের অবস্থা ভাল রয়েছে। আর গভীর রাতে রোগী খারাপ হয়ে মারা গেল! চিকিৎসার জন্য ডেকেও চিকিৎসককে পাওয়া যায়নি। চিকিৎসকেরা গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করলে আমার বোনের মৃত্যু হত না। তাই থানাতে আমরা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি।”

চিকিৎসক রথীনবাবু বলেন, “প্রায় একমাস ধরে রোগী জ্বর, শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এদিনও রাতে রোগীকে মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। তবে পরিবারের লোকেরা গুরুত্ব দেননি। এখন আমাকে মারধর করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে।” হাসপাতালের তরফেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Doctors Medical
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy