Advertisement
E-Paper

সংক্রমণের ভয় নিয়েই গাদাগাদি

এই দুর্ভোগে পড়েছেন ওয়ার্ডে চিকিত্সাধীন বহু শিশুদের মায়েরা। শয্যায় একাধিক শিশু থাকার কারণে জায়গার অভাবে তাঁরা কোনওরকমে এককোণে বসে সন্তানদের নজরদারি ও পরিচর্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩১
জেলা হাসপাতালের শিশু বিভাগ। নিজস্ব চিত্র

জেলা হাসপাতালের শিশু বিভাগ। নিজস্ব চিত্র

ভাটোল এলাকার বাসিন্দা বধূ রাবেয়া খাতুনের ১৪ দিনের কন্যাসন্তান দু’সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছে। চিকিত্সকের পরামর্শে শুক্রবার দুপুরে মেয়েকে রায়গঞ্জ হাসপাতালের শিশু-বিভাগের ১৮ নম্বর শয্যায় ভর্তি করান রাবেয়া। বিহারের বলরামপুরের বাসিন্দা শেফালি সিংহের পাঁচ মাসের কন্যাসন্তান গত বুধবার থেকে শ্বাসকষ্টে ভুগছে। শনিবার সকালে মেয়েকে শিশুবিভাগে ভর্তি করেন রাবেয়া। শয্যার অভাবে সেই শিশুটিকেও সেই ১৮ নম্বর শয্যাতেই ভর্তি করে নেন নার্সেরা।

শুধু রাবেয়া ও শেফালিদের সন্তানেরাই নয়। দু’সপ্তাহ ধরে শিশু-বিভাগে জ্বর, কাশি, ডায়েরিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে শয্যার অভাবে একই শয্যায় কখনও দু’জন আবার কখনও তিনজন শিশুকে ভর্তি রেখে চিকিত্সা পরিষেবা দিতে বাধ্য হচ্ছেন রায়গঞ্জ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রাবেয়া ও শেফালি বলেন, ‘‘একই শয্যায় দু’জন অসুস্থ দুই মেয়েকে নিয়ে বসে রয়েছি। কোনও মতে দুটি শিশুকে পাশাপাশি শোওয়াতে পারলেও আমাদের বসার জায়গা হচ্ছে না। জায়গার অভাবে শিশুদের দুধ খাওয়াতে ও মলমূত্র সাফাই করতে খুব সমস্যা হচ্ছে।’’

এই দুর্ভোগে পড়েছেন ওয়ার্ডে চিকিত্সাধীন বহু শিশুদের মায়েরা। শয্যায় একাধিক শিশু থাকার কারণে জায়গার অভাবে তাঁরা কোনওরকমে এককোণে বসে সন্তানদের নজরদারি ও পরিচর্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন অসুস্থ শিশুদের সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে, তেমনই ভিড়ের চাপে শিশুদের চিকিত্সা পরিষেবা দিতে গিয়েও হিমশিম খাচ্ছেন চিকিত্সক ও নার্সরাও। ইটাহারের দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা জান্নেরা বেগমের আট মাসের কন্যাসন্তান ও বিহারের বারসইয়ের বাসিন্দা রেণুদেবীর দেড় বছরের পুত্রসন্তান ডায়েরিয়া, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে একই শয্যায় চিকিত্সাধীন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘একজন শিশু বমি বা মলত্যাগ করলে অন্য শিশুর গায়ে এসে লাগছে। তাই বাচ্চাদের সংক্রমণের আশঙ্কায় ভয়ে আছি।’’

হাসপাতালের সুপার গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘‘শয্যার অভাবে শিশু-বিভাগে একই শয্যায় একাধিক শিশু থাকলে সংক্রমণের আশঙ্কা তো রয়েছেই। ভিড়ের চাপে চিকিত্সক ও নার্সদেরও পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। জায়গার অভাবে শয্যা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। নতুন শিশুবিভাগ তৈরির কাজ চলছে। ওই বিভাগটি চালু না হওয়া পর্যন্ত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।’’

শিশুবিভাগে মোট ৩৫টি শয্যা রয়েছে। শনিবার শিশুবিভাগে জ্বর, কাশি, ডায়েরিয়া ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ৫৫ জন শিশু চিকিত্সাধীন রয়েছে। তাই একেকটি শয্যায় দুই থেকে তিনজন করে শিশুকে ঠাসাঠাসি করে রাখতে হয়েছে। শিশুবিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৭ জন করে শিশু ভর্তি হয়। প্রায় সমসংখ্যক শিশুর ছুটিও হয়ে যায়। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। চিকিত্সকেরাও জানাচ্ছেন, চিকিত্সা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে একটু সুস্থ হলেই শিশুদের ছুটি দিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।

Raiganj Hospital Raiganj bed shortage রায়গঞ্জ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy