Advertisement
E-Paper

শান্তিতেই ভোট মিটল পুরাতন মালদহে

পুরসভার ভোট ঘিরে সন্ত্রাশের আশঙ্কা ছিল। রাজ্যের অধিকাংশ এলাকাতেই ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু পুরাতন মালদহ পুরসভায় নির্বাচন হয়েছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ। শুধু শাসকদল নয়, বলছেন বিরোধীরাও। কিন্তু পাশেই ইংরেজবাজার পুরসভার ভোটে যেখানে একাধিক অভিযোগ উঠেছে সে ক্ষেত্রে কীভাবে ওই পুরসভায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব হল?

বাপি মজুমদার

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩০
পুরাতন মালদহে ভোট দিতে আসা এক বৃদ্ধাকে সাহায্য খুদেদের। —নিজস্ব চিত্র।

পুরাতন মালদহে ভোট দিতে আসা এক বৃদ্ধাকে সাহায্য খুদেদের। —নিজস্ব চিত্র।

পুরসভার ভোট ঘিরে সন্ত্রাশের আশঙ্কা ছিল। রাজ্যের অধিকাংশ এলাকাতেই ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু পুরাতন মালদহ পুরসভায় নির্বাচন হয়েছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ। শুধু শাসকদল নয়, বলছেন বিরোধীরাও। কিন্তু পাশেই ইংরেজবাজার পুরসভার ভোটে যেখানে একাধিক অভিযোগ উঠেছে সে ক্ষেত্রে কীভাবে ওই পুরসভায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব হল?

বিরোধীদের দাবি, এক দিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল, তাই তারা একজোট হতে পারেনি। পাশাপাশি কিছু ওয়ার্ডে বিরোধীরা অলিখিত জোট করায় শাসকদল ওই পুরসভার নির্বাচনে সুবিধা করে উঠতে পারেনি। এ ছাড়া এলাকার মানুষও চেয়েছিলেন শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। অশান্তি হলে যে বাধার মুখে পড়তে হতে পারে, সেটাও আঁচ করতে পেরেছিলেন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। তাই দিনের শেষে শুধু ভোটাররাই নন, স্বস্তিতে প্রশাসনও। মালদহের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘পুরাতন মালদহে ৮২ শতাংশ ভোট পড়েছে! নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে।’’

গত নির্বাচনে পুরসভার বোর্ড দখল করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে চেয়ারম্যান বিভূতি ঘোষ সহ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে বোর্ড তৃণমূলের দখলে যায়। কিন্তু এবার নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই প্রার্থী পদ নিয়ে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রবল আকার নেয়। বিদায়ী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রার্থীপদ নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে নেতৃত্বের কাছে অভিযোগও জানানো হয়। কিন্তু তাতে ফল হয়নি বলে অভিযোগ।

যার জেরে পাঁচটি ওয়ার্ডে দলের একাধিক নেতা নির্দল হয়ে লড়াইয়ে নামেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি বশিষ্ঠ্য ত্রিবেদী, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন জেলা সভাপতি সফিকুল ইসলাম ওরফে নেপু! বিদায়ী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দলের অন্দরেই শুধু ক্ষোভ নয়! বিরোধীরাও জোট বেঁধে তার বিরুদ্ধে একজন নির্দল প্রার্থীকে দাঁড় করান! সেখানে অন্য কোনও দল প্রার্থী দেয়নি! ফলে ঘরে বাইরে কিছুটা হলেও কোণঠাসা হয়ে পড়েন বিদায়ী চেয়ারম্যান। স্বভাবতই ভোটের আগে থেকেই ওই পুরসভায় অগোছালো অবস্থায় পড়তে হয় তৃণমূলকে।

মালদহ বিধানসভার কংগ্রেস বিধায়ক অর্জুন হালদার বলেন, ‘‘এখানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। আমরা যা চেয়েছিলাম সেটাই হয়েছে। তিনি বলেন, দক্ষিনবঙ্গে যা হয়েছে ও এদিন হয়েছে তা দেখে ভোটারদের মনে আশঙ্কা ছিল না তা নয়! কিন্তু এখানে তৃণমূল মানুষের সমর্থন পায়নি। কারণ, ওরা তো নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেনি। কংগ্রেসের হয়ে জিতে পরে তৃণমূলে গিয়েছে। তাই কিছু হলে মানুষ যে ছেড়ে কথা বলবে না সেটা ওরা বুঝতে পেরেছিল।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি শিবেন্দু শেখর রায়ও বলেন, ‘‘ওখানে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। অবাধ ভোট হওয়ায় আমরা আশাবাদী যে ওখানে বিজেপি ভালো ফল করবে। ওই পুরসভায় দলেই প্রচুর বিক্ষোভ ছিল। ফলে ওরা একজোট হতে পারেনি।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘ওখানে তৃণমূল তো চোরাপথে ক্ষমতায় এসেছে! তাই মানুষের নৈতিক সমর্থন যে ওদের পক্ষে নেই সেটা বুঝতে পেরেই ওখানে শাসকদল গন্ডগোল পাকানোর সুযোগ পায়নি।’’

নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে জানিয়ে বিদায়ী চেয়ারম্যান বিভূতি ঘোষের অবশ্য দাবি, ‘‘মানুষ আমাদের সঙ্গেই রয়েছে। তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী বশিষ্ঠ ত্রিবেদী দিনের শেষে হাসতে হাসতে দাবি করেছেন, তৃণমূল এখানে ক্ষমতায় আসবে না লিখে রাখুন! বড় জোর ওরা পাঁচটি আসন পাবে! আর বোর্ড ত্রিশঙ্কু হবে।’’

Bapi Majumder Trinamool old malda. Municipal electio election BJP Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy