ভয়াবহ: পাড় ভাঙছে গঙ্গার। ভিটেছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় বাসিন্দারা। ভুতনিতে। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
ভুতনির কেশরপুর কলোনিতে মূল বাঁধ থেকে গঙ্গা কোথাও ৭ মিটার তো কোথাও ১০ মিটার দূরে বইছে। ওই কলোনি এলাকায় প্রায় আধ কিলোমিটার জুড়ে চলছে ভাঙন। রোজই গঙ্গা গর্ভে চলে যাচ্ছে জমি। সেচ দফতরের তরফে ভাঙন রোধের কাজ শুরু হলেও সেই কাজ চলছে খুবই কম এলাকায়। পুরো এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ না হলে বাঁধ ভেঙে বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভুতনির হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা।
পাশাপাশি ওই পঞ্চায়েতেরই রাজকুমার টোলাতে আধ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গঙ্গা ভাঙন চলছে। যদিও সেখানে বাঁধ থেকে নদীর দূরত্ব রয়েছে এখনও ৩০ থেকে ৪০ মিটারের মধ্যে। ভাঙন কবলিত ওই দু’টি এলাকাই এ দিন পরিদর্শন করেন মালদহের জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য।
জল বাড়তেই গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়েছে মানিকচক ব্লকের ভূতনির কেশরপুর কলোনি ও রাজকুমার টোলা এলাকায়। কয়েকদিন আগেই কেশরপুর কলোনির ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন এলাকার বিধায়ক মোত্তাকিন আলম। এ দিন যান মালদহের জেলাশাসক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবতোষ মণ্ডল ও ভিমলা রঙ্গনাথন। ছিলেন সদর মহকুমা শাসক সিয়াদ এন, জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল, সেচ দফতরের মালদহ ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রণব সামন্ত সহ অনেকেই। শঙ্করটোলা ঘাট থেকে স্পিডবোটে চেপে তাঁরা বাহডুকরা ঘাটে পৌঁছোন। সেখান থেকে যান ভাঙন কবলিত কেশরপুর কলোনিতে।
সেচ দফতর প্রায় দেড়শো মিটার এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ শুরু করেছে। বাঁশের খাঁচা করে তাতে কোথাও বালির বস্তা বা কোথাও পাথর বস্তায় ভরে সেই খাঁচা নদীতে ফেলে ভাঙন ঠেকানো হচ্ছে। দফতরের এক কর্তা জানালেন, সাময়িকভাবে ভাঙন ঠেকাতেই এই কাজ করা হচ্ছে। এ দিন সেই কাজের তদারকি করেন জেলাশাসক। ভাঙন প্রতিরোধে সেখানে তিনি ভেটিভার গাছ লাগানোরও পরামর্শ দেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, গঙ্গায় জল বাড়তে শুরু করলে ভাঙন আরও বেড়ে যাবে।
এ দিনই রাজকুমারটোলায় যান প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সেখানেও বাঁধের কাছাকাছি প্রায় পাঁচশো মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন চলছে। এলাকার বাসিন্দা রমেন মণ্ডল, শেখর মণ্ডল, আনন্দ মণ্ডলরা জানান, ২০১৩-তে জলের তোড়ে রাজকুমারটোলায় বাঁধ ভেঙে গোটা হীরানন্দপুর পঞ্চায়েত এলাকায় বন্যা হয়েছিল। পরের দু’বছর বালির বস্তা ফেলে কোনও রকমে নদীকে রোখা হয়। গত বছর সেচ দফতরের তরফে নতুন বাঁধ হয়েছে। কিন্তু এবারও নদী ভাঙতে ভাঙতে বাঁধের কাছাকাছি চলে আসতে শুরু করায় তাঁরা ফের বন্যার আশঙ্কা করছেন।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘গঙ্গা ভাঙন রুখতে কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষকেও ভাঙন রোধের কাজ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy