Advertisement
E-Paper

সাধন স্যর নেই, ভাবতেও পারছে না দিনহাটা

পরিচিত প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন আর পাঁচটা দিনের মতোই। এর পরেই বুধবার সন্ধ্যায় দিনহাটা কলেজের অধ্যক্ষ সাধন করের (৫৪) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর এই অকস্মাৎ মৃত্যুতে ছাত্রছাত্রীরা তো বটেই, শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে গোটা দিনহাটা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৯
 প্রয়াত: সাধন কর

 প্রয়াত: সাধন কর

কলেজে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় দিঘির পাড়ে প্রতিদিনের মতো পায়চারিও করেন। পরিচিত প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন আর পাঁচটা দিনের মতোই। এর পরেই বুধবার সন্ধ্যায় দিনহাটা কলেজের অধ্যক্ষ সাধন করের (৫৪) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর এই অকস্মাৎ মৃত্যুতে ছাত্রছাত্রীরা তো বটেই, শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে গোটা দিনহাটা।

হঠাৎ কেন তাঁর এমন মৃত্যু হল তা নিয়ে তদন্ত শুরু করছে পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মাস কয়েক আগে বাড়িতেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান তাঁর মা বিধুরানি কর। সেই থেকেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন সাধনবাবু। ইদানীং শারীরিক অসুস্থতাও ভুগছিলেন তিনি। দিন কয়েক আগেই বেঙ্গালুরু থেকে চিকিৎসা করিয়ে ফেরেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “ওই ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

দিনহাটার থানাপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন সাধনবাবু। বছর চারেক ধরে দিনহাটা কলেজের অধ্যক্ষের পদে ছিলেন তিনি। তার আগে ওই কলেজেই পড়াতেন। সাধনবাবু কলেজ তো বটেই, দিনহাটা, কোচবিহার থেকে তাঁর পরিচিত মহলে আদ্যন্ত ভালমানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন সাধনবাবু। দিনহাটা কলেজের শিক্ষক সূর্যনারায়ণ রায় বলেন, “দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবকদের সঙ্গেও খুব ভাল সম্পর্ক ছিল তাঁর। সব সময় হাসিমুখে কথা বলতেন। কিছুদিন থেকে অবশ্য একটু অন্যরকম ছিলেন।”

বুধবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কলেজে ছিলেন সাধনবাবু। সবার সঙ্গেই স্বাভাবিক আচরণ করেছেন। সূর্যবাবু বলেন, “মাঝে মাঝে বলতেন শরীর খারাপ যাচ্ছে। মন ভাল নেই। কিন্তু বুধবার তিনি যখন কলেজ থেকে বেরিয়ে যান তখনও তাঁকে দেখে মনে হয়নি কিছুক্ষণের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটবে।” থানাপাড়ার বাসিন্দা তৃণমূলের ছাত্রনেতা সাবির সাহা চৌধুরীও অবাক এই ঘটনায়। তিনি জানান, ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের বাইরেও তাঁরা প্রতিবেশী ছিলেন। তিনি বলেন, “সন্ধ্যায় দিঘির পাড়ে হাঁটাহাটি করে বাড়ি ফিরে যান স্যর। তখনও কিন্তু স্বাভাবিক ছিলেন। আমরা তাই হতবাক।”

বৃহস্পতিবার কোচবিহার এমজেএন হাসপাতাল থেকে সাধনবাবুর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় দিনহাটায়। ছাত্রছাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ, সকলেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর স্ত্রী শুক্লাদেবী, মেয়ে সুকন্যা ও ছেলে সিঞ্চল। তাঁর বন্ধু দিনহাটার বাসিন্দা বিভুরঞ্জন সাহা বলেন, “সাধন অসম্ভব ভাল মানুষ ছিল। এমন ভাবে তাঁর মৃত্যু হল ভাবতেও পারছি না।’’

ঘটনার পর থেকেই বাড়ির লোকেরা কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। শুধু কেঁদে চলেছেন। দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “দিন কয়েক আগেই পরিচালন সমিতির বৈঠকে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত দেখেছিলাম। চিকিৎসক দেখাতে বলি। এই দু’দিনের মধ্যে যে এমন ঘটনা ঘটবে ভাবতেও পারিনি।”

Teacher Death Suicide Dinhata Sadhan Kar সাধন কর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy