মিত্র সম্মিলনী হলে নাগরিক সভা। — নিজস্ব চিত্র
এ বার শহরের যানজট সমস্যা মেটাতে মনো বা মেট্রো রেল চালুর দাবি উঠল নাগরিক সভায়। রবিবার দুপুরে শিলিগুড়ির মিত্র সম্মিলনী হলে পরিবেপ্রেমী সংগঠন ‘সিটিজেন ফোরাম ফর শিলিগুড়ি’ ডাকে সভাটি হয়। শহরের ৪২টি সংগঠনের ১৮১ প্রতিনিধি অংশ নেন। তাঁদের সকলেই একযোগে শহরের গতি বাড়াতে মনো, মেট্রো রেলের প্রস্তাবকে সমর্থনন করেন।
সভায় বিষয়টি তোলেন বৃহত্তর শিলিগুড়ি নাগরিক মঞ্চের তরফে রতন বণিক। রতনবাবু বলেন, ‘‘শহরে যানজট বেড়েই চলেছে। এখনই এনজেপি থেকে মাটিগাড়া, বিধাননগর নকশালবাড়ি মিলিয়ে মনো বা মেট্রো রেল প্রয়োজন।’’ রতনবাবু জানান, শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে সমস্ত প্রশাসনিক দফতর কাওয়াখালিতে নতুন বহুতল তৈরি করে নিয়ে যেতে পারলে, যানজট সমস্যা মিটবে।
সম্প্রতি শহরে মেট্রো, মনো রেল চালানোর দাবি উঠতে শুরু করেছে। রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্তা তারকনাথ ভট্টাচার্য, কংগ্রেস নেতা সুজয় ঘটক রেলমন্ত্রী কাছে দাবিপত্র পাঠিয়েছেন। রেলের অন্দরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই সার্কুলার রেল বা মনো রেলের প্রস্তাব রেল নিয়েছে। তা নিয়ে কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। ফোরামের অন্যতম আহ্বায়ক অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘যানজট মেটাতে স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা ছাড়াও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা দরকার। ডুয়ার্স, জলপাইগুড়ির অংশকে জুড়ে মেট্রো, মনো রেল প্রয়োজন। মঞ্চ এই দাবি নিয়ে কাজ করবে।’’
এ দিন মহানন্দা নদী দূষণ, দখল এবং যানজটকে সামনে রেখেই সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে মনো রেলের মতোই প্লাস্টিক ক্যারিবাগ, আবর্জনার প্রসঙ্গও ওঠে। তেমনই ফুটপাত দখল-বিক্রি, বেআইনি নির্মাণের প্রসঙ্গে তুলেও অনেকে সরব হন। হিলকার্ট রোড ব্যবসায়ী সমিতির বিমল রায় সরকার, প্রাক্তন খেলোয়াড় চয়ন ভট্টাচার্য, পরিবেশপ্রেমী সুজিত রাহা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার তাপস চট্টোপাধ্যায়রা নদীর নাব্যতা, দখল নিয়ে সরব হন। যানজট নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এক সময়কার ৩৩০ মিটার চওড়া কী করে ১০০ মিটারে দাঁড়িয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্নও ওঠে। তেমনই, ক্রীড়া পরিষদের অন্যতম কর্তা মনোজ বর্মা প্লাস্টিক ক্যারিবাগ বন্ধ নিয়ে সদিচ্ছা, সাফাই, জঞ্জাল ঘিরে দৃশ্যদূষণের কথা বলেন। ন্যাফ, ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন, জেপস, ভলেন্টারি ব্লাড ডোনার্স, সাহু সমিতি, শিলিগুড়ি নাগরিক সমিতি, মাওবাদী সেবা মঞ্চ, বিহারী কল্যাণ মঞ্চ, উসমা, দেওকোটা সমিতি, উইরেসিয়া রেইকি-মতো সংগঠনের প্রতিনিধিরা সভায় এসেছিলেন।
সভার উপস্থিত সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র সমর সরকার সকলে মিলে একযোগে কাজ করার উপর জোর দেন। তেমনই, পুলিশি ডিসি (সদর) ইন্দ্র চক্রবর্তী নদী শুধু নয়, বেআইনি দখলদার হঠানো নিয়ে সরকারি নির্দেশিকার কথাও জানান। তিনি জানিয়ে দেন, নতুন করে দখলদারি নয়ই, পুরানো এলাকা দেখতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সমীক্ষার কাজও হচ্ছে। মঞ্চের কাছে যানজট সমস্যা মেটাতে পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানান। মহানন্দার দূষণের সঙ্গে নাম উঠে আসে জোড়াপানি, ফুলেশ্বরী, পঞ্চনই নদীর নামও। ফোরামের তরফে জ্যোৎস্না অগ্রবাল জানান, বহু প্রস্তাব এসেছে।
পুরসভার ৪৭ জন কাউন্সিলরকে চিঠি পাঠানো হলেও কংগ্রেসের সুজয়বাবু, তৃণমূলের মানিক দে, মঞ্জুশ্রী পাল শুধু সভায় উপস্থিত ছিলেন। নান্টু পাল সংগঠনের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy