মশার উপদ্রবে দু’চোখের পাতা এক করা মুশকিল। যদিও বা এক করা যায় তাহলে থাকে জিনিস চুরি যাওয়ার ভয়। মশা, চোর ছাড়াও রয়েছে আরশোলা, ইঁদুরের দাপাদাপিও। এক সময়ের মালদহের ঐতিহ্যবাহী ট্রেন ছিল গৌড় এক্সপ্রেস। এখন তার পরিষেবা নিয়েই ক্ষোভে ফুঁসছেন যাত্রীরা।
অভিযোগ, অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতার তো রয়েছেই। তার সঙ্গে দোসর হয়েছে ট্রেনের দেরি হওয়া। গৌড় এক্সপ্রেসে এখন ন্যূনতম পরিষেবাও মিলছে না বলে দাবি তাঁদের। মালদহের বাসিন্দা পার্থ বসু বলেন, “ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে প্রায় কলকাতা যেতে হয়। তাই কলকাতা যেতে মালদহের বহু মানুষের এক সময়ের পছন্দের ট্রেন ছিল গৌড়।” কেন চাহিদা গৌড় এক্সপ্রেসের? তিনি বলেন, “রাত সাড়ে নটা নাগাদ মালদহ থেকে ট্রেনটি ছাড়ে। আর শিয়ালদহে পৌঁছায় সকাল ছ’টায়। যাত্রীরা নিশ্চিন্তে রাতে যেতে গৌড় এক্সপ্রেসেই বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু এখন যা অবস্থা তাতে গৌড়ের বদলে অন্য ট্রেন ধরছেন যাত্রীরা।
প্রয়াত গনিখান চৌধুরী রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৮১ সালে গৌড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু করেন। গৌড়বঙ্গের তিন জেলা মালদহ ও দুই দিনাজপুরের যাত্রীদের সুবিধার্থে ট্রেনটি চালু করা হয়। ট্রেনটিতে পাঁচটি বাতানুকূল, ১১টি সংরক্ষিত ও দু’টি সাধারণ কামরা রয়েছে। গৌড় এক্সপ্রেসের ছ’টি কামরা নিয়ে আবার বালুরঘাট লিঙ্ক। গৌড় এক্সপ্রেসে শুধু তিন জেলার সাধারণ মানুষই নয়, জেলা পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তা, সাংসদ, বিধায়করাও ট্রেনটি ব্যহার করেন। এরপরেও গৌড় এক্সপ্রেস নিয়ে যাত্রীদের অগণিত অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, বাতানুকূল কামরার যন্ত্রগুলো অধিকাংশই পুরনো। ফলে সেসব ঠিকমতো কাজ করে না। সংরক্ষিত কামরার ছাদ ফুটো থাকায় বর্ষার সময় চাঙর বেয়ে জল গড়ায়। অনেক কামরার পাখাও অকেজো। গরমের সময় প্রবল কষ্টে ভোগেন যাত্রীরা। অভিযোগ রয়েছে শৌচাগারের অবস্থা নিয়েও। বেশিরভাগ শৌচাগারের জানলা-দরজার লকও ভাঙা। ফলে সেগুলো ব্যবহার করাও যায় না।
পরিকাঠামোগত নানা সমস্যার পাশাপাশি রয়েছে মশা, আরশোলা, ইঁদুরের উপদ্রবও। মশার কামড় খেয়েই রাত্রি কাটাতে হয় যাত্রীদের। যাত্রীদের মধ্যে রয়েছে চুরির আতঙ্কও। গত, শুক্রবার এক মহিলা যাত্রীর ব্যাগ লুঠের ঘটনা ঘটেছে বাতানুকূল কামরায়। গত জুনেও কামরা থেকেই বিধায়কদের ব্যাগ চুরি হয়েছে। যদিও সেক্ষেত্রে চুরি যাওয়া ব্যাগ উদ্ধার করে দিয়েছিল রেল পুলিশ। এখানেও শেষ হচ্ছে না সমস্যা। সম্প্রতি, গৌড় এক্সপ্রেসের দেরিতে চলার অভিযোগ রয়েছে। রাত ন’টা ৩৫ মিনিটে ট্রেনটি ছাড়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ দিন ছাড়ে দশটায়। অনেক সময় আবার সাড়ে দশটাও বেজে যায়। যদিও রেলের দাবি, বালুরঘাট লিঙ্ক দেরিতে এলেই গৌড় ছাড়তে দেরি হয়।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌড় এক্সপ্রেস ছিল আগে মালদহ ডিভিশনের অধীনে। বছর দশেক ধরে এর দায়িত্বে রয়েছে শিয়ালদহ ডিভিশন। সব সমস্যা মোকাবিলার চেষ্টা চলছে বলে জানান মালদহের এডিআরএম বিজয় কুমার সাহু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy