Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Maldah

ভাঙন, জলোচ্ছ্বাসে এলোমেলো জীবন, ‘মেলেনি’ ত্রাণও

এক দিকে, মালদহের মানিকচক ও অপর দিকে, ঝাড়খণ্ড। মাঝে বয়ে চলেছে গঙ্গা। সে গঙ্গাতেই রয়েছে নারায়ণপুর চর।

ঠাঁই: এ ভাবেই খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন দুর্গতরা। মানিকচকে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।

ঠাঁই: এ ভাবেই খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন দুর্গতরা। মানিকচকে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।

জয়ন্ত সেন 
মানিকচক শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২২ ০৯:০৩
Share: Save:

এক দিকে, গঙ্গা ভাঙনে বিঘার পরে বিঘা জমি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। তার উপরে জলোচ্ছ্বাসে গঙ্গার জল ঢুকে প্লাবিত হয়ে পড়েছে চরের বেশিরভাগ এলাকা। এই পরিস্থিতে আসবাব, বাসন, গবাদিপশু, এমনকি, ঘরের চাল নৌকায় চাপিয়ে মালদহের নারায়ণপুর চরের একের পরে এক পরিবার আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন গঙ্গার এ পারে মানিকচক ঘাটের পাশে থাকা ফাঁকা জমিতে।

প্রায় ২০০টি পরিবার ইতিমধ্যে এ পারে চলে এসেছেন। সেখানে কার্যত খোলা আকাশের নীচেই তাঁদের দিন কাটছে বলে অভিযোগ করলেন। প্রশাসনের লোকজন এসে খোঁজ নিলেও, মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সরকারি কোনও ত্রাণ মেলেনি বলে দুর্গতদের অভিযোগ। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিলির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এক দিকে, মালদহের মানিকচক ও অপর দিকে, ঝাড়খণ্ড। মাঝে বয়ে চলেছে গঙ্গা। সে গঙ্গাতেই রয়েছে নারায়ণপুর চর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই চরের বেচুটোলা ও ঢোড়াইটোলা—এই দু’টি এলাকায় প্রায় ৫০০ পরিবারের বাস। চরে চাষবাস ও গবাদি পশুপালন করেই তাঁদের জীবন-জীবিকা চলে। গঙ্গা নদীর জল বাড়লে ফি বছরই এই চর এলাকা প্লাবিত হয়। এই চর এলাকাকে গঙ্গা নদীর জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঁচাতে প্রায় দু’দশক আগে, প্রশাসনের তরফে একটি রিংবাঁধ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু লাগাতার ভাঙনে সে রিংবাঁধের বড় অংশ গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে।

এ বার মালদহ ও ঝাড়খণ্ড, দু’দিক থেকেই গঙ্গা ভাঙনে চরের বিস্তীর্ণ অংশ নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। ফলে, চরের বাসিন্দারা ভাঙনে গ্রাসে জেরবার। তার উপরে গত কয়েকদিন ধরে গঙ্গার জল ক্রমাগত বেড়ে চলায় রবিবার থেকে জল ঢুকে প্লাবিত হয়ে পড়েছে চরের বিস্তীর্ণ অংশ। মঙ্গলবারও গঙ্গার জলস্তর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এই পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচাতে নারায়ণপুর চরের বাসিন্দারা নৌকা করে গঙ্গা পেরিয়ে মানিকচক ঘাটের পাশে থাকা জমিতে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। সেখানে দুর্গত বিশ্বনাথ, গৌরীশঙ্কররা জানালেন, এক দিকে, গঙ্গার ভাঙন, অপর দিকে, গঙ্গার জল ঢুকে পড়ায় চরে জীবন সংশয়ের জোগাড় হয়েছে। তাই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গবাদিপশু, আসবাবপত্র যা পেরেছেন তা নিয়ে এ পারে আশ্রয় নিয়েছেন।

এক দুর্গত সুরেন চৌধুরী বললেন, ‘‘মাথা গোঁজার ব্যবস্থা এখনও করতে পারিনি। প্রশাসনের লোকজন এসে খোঁজ নিয়ে গেলেও, মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ত্রাণ পাইনি।’’ সদর মহকুমাশাসক সুরেশচন্দ্র রানো বলেন, ‘‘ওই দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিলির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ত্রিপল, চাল ও শুকনো খাবার বিলি করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Maldah ganga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE