E-Paper

প্রায়-পরিত্যক্ত বাড়িতে বসেই ছক কষা খুনের

বাড়ি নিয়েই দুলালের অনুগামীদের সঙ্গে রোহনের বচসা হয়েছিল বছর খানেক আগে। পুলিশ জানিয়েছে, দুলাল-খুনে প্রধান চক্রী রোহন এখনও ফেরার।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:০৯
নিহত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার।

নিহত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। —ফাইল চিত্র।

রাজ্য সড়কের ধারে ইটের গাঁথনির উপর টালির প্রায়-পরিত্যক্ত বাড়ি। সামনে এক ফালি ফাঁকা জমিতে সজনে গাছ। ইংরেজবাজার শহরের মহানন্দাপল্লির সেই বাড়ি থেকে নিহত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার ওরফে বাবলার (৬২) আবাসনের দূরত্ব মাত্র দেড়শো মিটার। পুলিশের দাবি, সেই বাড়িতে বসেই প্রায় ছ’মাস ধরে দুলাল-খুনের পরিকল্পনা করা হয়। সে বাড়ি থেকেই দুলালের গতিবিধির উপর নিয়মিত নজরদারি চালাত খুন-কাণ্ডে ধৃত শহরের রেল কলোনির বাসিন্দা অমিত রজক ওরফে অরুণ আর টিঙ্কু ঘোষেরা। শুক্রবার রাতে ইংরেজবাজার শহর থেকে মহানন্দাপল্লির অমিত রজক ওরফে অরুণ এবং ঘোড়াপীর ঘোষপাড়ার অভিজিৎ ঘোষকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, এই খুনের ঘটনার মূল চক্রী অরুণের দাদা রোহন।

বাড়িটি অরুণের এক বৃদ্ধা আত্মীয়ের। তিনি দু’বছর আগে মারা যান। বৃদ্ধা মারা যাওয়ার পরে অরুণ ও তার দাদা রোহন রজক এই বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। ওই বাড়ির পাশের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘পাঁচ থেকে ছ’মাস ধরে ওই বাড়িতে অপরিচিত যুবকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। মদের আসর বসত।’’ তবে অরুণ ও রোহন খুবই ‘সাদামাটা’ হওয়ায় সন্দেহ হয়নি বলে দাবি তাঁর। প্রতিবেশী এক মহিলা বলেন, ‘‘বাবলাদা মহানন্দাপল্লির অভিভাবক ছিলেন। মহানন্দাপল্লিতেই বসে খুনের ছক হয়েছিল ভেবে গা শিউরে উঠছে।’’

ওই বাড়ি নিয়েই দুলালের অনুগামীদের সঙ্গে রোহনের বচসা হয়েছিল বছর খানেক আগে। পুলিশ জানিয়েছে, দুলাল-খুনে প্রধান চক্রী রোহন এখনও ফেরার। দাবি, রোহন ও তার ভাই অরুণ টিঙ্কু-অভিজিৎকে নিয়ে বিহারের দুষ্কৃতীদের নিয়ে খুনের জন্য একটি ‘গ্যাং’ তৈরি করে। বিহারের দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিল বলে দাবি। গুলি টিঙ্কু ও রোহন চালায় বলেই দাবি পুলিশের।

টিঙ্কু উত্তর সানি পার্কে মা-দিদিকে নিয়ে মামার বাড়িতে থাকত। বাবা দীর্ঘদিন আগে তাদের ছেড়ে চলে যান। মা জমির কারবারি। দুর্গাপুজোর আগে টিঙ্কু তার মা আর বিবাহিত দিদিকে নিয়ে ইংরেজবাজারের যদুপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গাবগাছি গ্রামে ভাড়া চলে যায়। টিঙ্কুর সঙ্গে ঘোষপাড়ার অভিজিৎ ঘোষের বন্ধুত্ব রয়েছে। টিঙ্কু ভিন্ রাজ্যে কাজ করত। সেই সূত্রেই বিহারের দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের।

পুলিশ জানিয়েছে, দুলালের উপর গুলি চালানোর সময় টিঙ্কু, রোহন এবং বিহারের আব্দুল গনি ও মহম্মদ শামি আখতার ছিল। খুনের পরে ফাঁকা জায়গায় পোশাক বদল করে তারা। তাদের পালাতে সাহায্য করে অরুণ এবং অভিজিৎ। আরও এক যুবকের সংযোগ-সূত্র মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘আরও দু’জনে গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Malda TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy