E-Paper

বিধানসভা ভোটের মুখে ‘ঢুকছে’ অস্ত্র

পুলিশ সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, নতুন বছর গোড়া থেকেই অস্ত্র ঢুকতে শুরু করেছে কোচবিহারে। পুলিশের কড়া নজরে ইতিমধ্যেই অস্ত্র উদ্ধারে বড় সাফল্য পাওয়া গিয়েছে।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫ ০৯:১৪
আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার এক।

আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার এক। নিজস্ব চিত্র।

সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে উত্তরপ্রদেশের একটি দৃশ্য। রং খেলাকে কেন্দ্র করে বচসা থেকে পিস্তল উঁচিয়ে এক জন আর এক জনের দিকে তেড়ে যাচ্ছে। ঠিক এমনটাই হয়েছে কোচবিহারের দিনহাটাতেও। রং খেলতে খেলতেই এক তরুণকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার ‘সঙ্গীর’ বিরুদ্ধে। তার পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, কোথা থেকে ওই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আসছে?

পুলিশ সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, নতুন বছর গোড়া থেকেই অস্ত্র ঢুকতে শুরু করেছে কোচবিহারে। পুলিশের কড়া নজরে ইতিমধ্যেই অস্ত্র উদ্ধারে বড় সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু পুলিশ যে অস্ত্র উদ্ধার করেছে, সেইটুকুই যে কেবল জেলায় ঢুকেছে, তা নয়। মনে করা হচ্ছে, ভিন্ রাজ্য থেকে অস্ত্রের জোগান আসছে অপরাধী চক্রের হাতে। পুলিশ
সূত্রে আরও খবর, বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার প্রস্তুতি হিসেবেই রাজনৈতিক দলের একটি অংশ আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করতে শুরু করেছে। আর তাতেই কোচবিহারে অস্ত্রের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে পুলিশ-প্রশাসনও।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে অস্ত্রের চাহিদা বাড়তে শুরু করে। সে সময়ে তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে ঘন-ঘন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহার। রাজনৈতিক সংঘর্ষে বহু মানুষ গুলি-বোমায় জখম হয়েছেন। এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তার পরেও একাধিক নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলির সংঘর্ষে গুলি-বোমা ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সেই সময় থেকেই অস্ত্র উদ্ধারে সক্রিয় হয়ে ওঠে পুলিশ। কোচবিহার থেকে কার্যত অস্ত্র সম্ভার উদ্ধার করা হয়। তার পরে পরিস্থিতি কিছুটা ঝিমিয়ে থাকলেও ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে অস্ত্র কারবারিরা। ওই কারবারে ধৃতদের পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদেই উঠে এসেছে, এখন থেকেই অস্ত্রের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এক একটি পিস্তলের দাম পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা বেড়েছে। বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে দাম তত বাড়বে বলেই ধারণা পুলিশের।

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, বিহারের মুঙ্গের ও সংলগ্ন জেলা থেকে চোরাপথে ওই অস্ত্র পৌঁছয় কোচবিহারে। পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে সড়ক পথে ঘন ঘন গাড়ি বদলে হাতবদল করে তা কোচবিহারে নিয়ে আসা হয়। পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে অনেক সময়েই পিস্তলের নানা অংশ আলাদা করে নিয়ে আসা হয়। কোচবিহারে পৌঁছে নিজস্ব ডেরায় ওই অংশ যুক্ত করে তা বাজারে বিক্রি করা হয়।
বিজেপির কোচবিহার জেলার নেতা বিরাজ বসু বলেন, ‘‘শাসক দলের দুষ্কৃতীদের হাতেই রয়েছে প্রচুর অস্ত্র। পুলিশের তা উদ্ধার করা উচিত।" তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, ‘‘অস্ত্রের রাজনীতি বিজেপি করে, তৃণমূল নয়। পুলিশের ধরপাকড়েই সব স্পষ্ট হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dinhata

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy