অবশেষে ক্রিকেট বেটিং নিয়ে সক্রিয় হল পুলিশ। শনিবার দিনভর তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ রাত পর্যন্ত শিলিগুড়ির ৪ জনকে ক্রিকেট বেটিংয়ের ‘বুকি’ সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাত পর্যন্ত তাদের শিলিগুড়ি থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এদের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত রয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ। তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ধৃতদের রবিবার শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) এ বেটিংয়ে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘বেশ কিছুদিন ধরে তল্লাশি চালানোর পরে এ দিন এদের রবীন্দ্রনগর এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত সকলকেই ধরা হবে।’’ ধৃতদের কাছ থেকে সাতটি মোবাইল ফোন ও ৯০ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম দূর্গানাথ পাল, রিপন পাল, মন্টু সাহা ও কৃষ্ণপদ পাল। এদের মধ্যে কৃষ্ণের বাড়ি রবীন্দ্রনগরে। বাকিরা হায়দরপাড়ার বাসিন্দা। কৃষ্ণের বাড়ি থেকেই এই এলাকার বেটিং চক্র চলত বলে জানানো হয়েছে। এরা সরাসরি বিভিন্ন লোকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাদের কাছ থেকে টাকা তুলত। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। বাজির টাকা তুলত। পুলিশ জানিয়েছে, এরা মূলত একটি এলাকা দেখত। এছাড়াও শহরের অন্য প্রান্তের আরও কিছু লোকজন যুক্ত রয়েছে। যদিও ধৃতরা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এই বেটিং চক্র গোটা শহরেই সক্রিয় বলে জানা গিয়েছে। মূলত সেবক রোড এলাকায় এই চক্রের মূল ঘাঁটি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। প্রধাননগর, স্টেশন ফিডার রোড, কলেজপাড়া, বিধান মার্কেট এলাকাতেও একাধিক ‘বুকি’ ছড়িয়ে রয়েছে। তাঁরাই খদ্দেরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। তাঁদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। মূল পাণ্ডা এক জায়গায় বসে পুরো চক্র পরিচালনা করে। আয়ের টাকা সেই পাঠিয়ে দেয় বাইরে কোনও জায়গায়। সেই টাকা হাওলায় খাটে বলেও জানা গিয়েছে। শাসকদলের মদতপুষ্ট বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এই চক্রের সঙ্গে সরাসরিভাবে জড়িত রয়েছে বলে পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন। গত বছর আইপিএল চলাকালীন এক পানশালার ম্যানেজারকে বেটিং চক্র চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কলেজপাড়া থেকেও এক ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ ছাড়া আরও কয়েকজনকে চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার হয় একাধিক ল্যাপটপ, এমনকী আইপিএল নিয়ে বাজি ধরা নিয়ে এক অটোচালককে খুনও হতে হয়েছিল শিলিগুড়িরই সেবক রোড এলাকায়। এর আগে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছিলেন শহরে এমন কোনও চক্রের খবর তাঁদের কাছে নেই। তার পনের দিনের মধ্যেই বড়সড় চক্র ধরা পড়ল শহরে। শিলিগুড়িতে প্রতি বছরই বেশ কিছু বুকিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেটিং চলার অভিযোগ উঠেছে গোটা টি২০ বিশ্বকাপ জুড়েও। তাতে অবশ্য এবার কেউ ধরা পড়েনি।