Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

দিনভর ধর্না দ্বিতীয় ‘স্ত্রী’র

অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ আধিকারিকের বাড়িতে এক মহিলার ধর্না!

ধর্না: রায়গঞ্জে গীতা বর্মণ। নিজস্ব চিত্র

ধর্না: রায়গঞ্জে গীতা বর্মণ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৫
Share: Save:

অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ আধিকারিকের বাড়িতে এক মহিলার ধর্না! সোমবার সারাদিন ধরে এ নিয়ে হইচই পড়ে যায় রায়গঞ্জের কসবা মোড় এলাকায়। গীতা বর্মণ নামে ওই মহিলা নিজেকে ওই আধিকারিকের ‘স্ত্রী’ বলে দাবি করেন। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকের নাম ফণীভূষণ বর্মণ। তবে ধর্নার সময় ওই আধিকারিক বাড়িতে ছিলেন না বলে দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী পবিত্রীদেবী। তবে বিকেলের দিকে অভিযোগকারী মহিলা ধর্না তুলে নিয়ে চলে যান।

গীতাদেবী জানান, শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ায় ভাড়াবাড়িতে থাকেন। তিনি একটি চা এবং খাবারের দোকান চালান। তাঁর দাবি, কয়েকবছর আগে ফণীভূষণ তাঁকে বিয়ে করেন। গীতাদেবী আরও জানান, ফণীভূষণ যে বিবাহিত, বিয়ের সময় তা তিনিও জানতেন। প্রথম স্ত্রীর অসুস্থতার যুক্তি দেখিয়ে তিনি তাঁকে বিয়ে করেন বলে গীতাদেবীর দাবি। গীতাদেবীর অভিযোগ, বছর ছয়েকেরও আগে ফণীভূষণ শিলিগুড়িতে কর্মরত থাকাকালীন দূর সম্পর্কের দিদির সঙ্গে আলাপের সুবাদে ফণীভূষণ তাঁর বাড়িতে আসেন। ততদিনে গীতাদেবীর স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে। তাঁর আগের পক্ষের দুই মেয়ে রয়েছে। মেয়েদের নিয়ে তিনি হায়দরপাড়ায় থাকতেন। গীতাদেবীর দাবি, তাঁর দিদির সঙ্গে ফণীভূষণের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে দিদি নিখোঁজ হয়ে যান। ফণীভূষণ এরপর গীতাদেবীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ফণীভূষণ বিবাহিত, তা জানতে পেরেছিলেন তিনি। গীতাদেবীর দাবি, ফণিভূষণ তাঁকে জানান, স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তাঁকে দ্বিতীয় বিয়েতে মত দিয়েছেন। এরপরেও গীতাদেবী ফণীভূষণের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি মোবাইলে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে অন্য একজনের সঙ্গে কথাও বলিয়ে দেন।

এরপরই শিলিগুড়িতে থাকার সময় সেবক কালীমন্দিরে বিয়ে করেন দু’জনে। তবে সেই বিয়ের কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেননি গীতাদেবী। হায়দরপাড়া ছেড়ে গীতাদেবী হাকিমপাড়ায় ভাড়াবাড়িতে আসেন। সেইসময় ফণীভূষণও তাঁর সঙ্গে ওই বাড়িতে থাকতেন। কয়েক বছর আগে ফণীভূষণ প্রথমে ব্যারাকপুরে এবং পরে রায়গঞ্জে বদলি হন। সাব ইনস্পেক্টর পদ থেকে গত বছর এপ্রিলে অবসর নিয়েছেন। গীতাদেবীর অভিযোগ, ‘‘শিলিগুড়ি থেকে চলে আসার পরে অন্তত ১৫ বার রায়গঞ্জে এসেছি। শিলিগুড়ি মোড়েও আমার সঙ্গে দেখা করত। আমিও ওদের এখানকার সংসারে কোনও অশান্তি চাই না। তবে বাড়িতে কেউ না থাকলে আমাকে বাড়িতে ডেকে নিত। বেশ কিছু দিন ধরে এখন ও আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাইছে না। সেটা হতে দেব না আমি। আমি কোনও সম্পত্তি চাই না। কিন্তু সম্পর্ক স্বীকার করতে হবে।’’

ওই আধিকারিকের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী এবং দুই ছেলে এবং এক বিবাহিত মেয়ে রয়েছেন। তাঁরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। অভিযুক্ত ফণীভূষণ বাড়িতে নেই বলে পরিবারের লোকেরা জানান। তাঁর স্ত্রী পবিত্রীদেবী বলেন, ‘‘ও জমিতে চাষের কাজে গিয়েছে। তবে এসব কিছুই আমি জানি না।’’

রবিবার বিকেলে শিলিগুড়ি থেকে রায়গঞ্জে এসেছেন গীতাদেবী। শিলিগুড়ি মোড়ে ওইদিন ফণীভূষণ তাঁর সঙ্গে দেখা করে চলে যেতে বলেন বলে তাঁর অভিযোগ। কিন্তু তিনি এখন আর কিছুই লুকোতে চান না। তাই রবিবার রাতে রায়গঞ্জ থানায় কাটিয়ে এদিন সকাল থেকে ধর্না দিয়েছেন বলে জানান। এ দিন দপুর ১২টায় ধর্নায় বসে বিকেল ৪টে নাগাদ উঠে যান তিনি। রায়গঞ্জ থানার পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানান, এখনও গীতাদেবী অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dharna Police Offier Raiganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE