Advertisement
০৪ মে ২০২৪

নিখোঁজ তরুণীকে মায়ের কাছে ফেরাল পুলিশ

সাত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক তরুণীকে দিল্লি থেকে উদ্ধার করে এনে তাঁর মায়ের হাতে তুলে দিল পুলিশ। রবিবার শামুকতলা থানার ধওলাঝোরা চা বাগানে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণী নাম রূপা লোহার। বাড়ি ধওলাঝোরা চা বাগানের শ্রমিক মহল্লায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শামুকতলা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০২:১৬
Share: Save:

সাত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক তরুণীকে দিল্লি থেকে উদ্ধার করে এনে তাঁর মায়ের হাতে তুলে দিল পুলিশ। রবিবার শামুকতলা থানার ধওলাঝোরা চা বাগানে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণী নাম রূপা লোহার। বাড়ি ধওলাঝোরা চা বাগানের শ্রমিক মহল্লায়। এ দিন রুপাকে ধওলাঝোরা চা বাগানে নিয়ে গিয়ে তাঁর মায়ের হতে তুলে দেন শামুকতলা থানার পুলিশ। রূপার মা বুদ্ধি লোহার এতদিন পর তাঁর হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন। তিনি বললেন, ‘‘অনেক খুঁজেও মেয়েকে না পেয়ে সাত বছর ধরে শুধু চোখের জল ফেলেছি। ও যে বেঁচে আছে সেটাও জানতাম না। পুলিশ আমার মেয়েকে আমার কোলে তুলে দিল। পুলিশকে অসংখ্য ধন্যবাদ। কিন্তু ওর বাবা মেয়েকে দেখে যেতে পারলেন না সেটাই দুঃখ থেকে গেল।’’ তিন বছর আগে অসুস্থ হয়ে রূপার বাবা অরুণ লোহারের মৃত্যু হয়। পরিজনেরা জানান, মারা যাওয়া আগে পর্যন্ত মেয়ের কথাই বলে গিয়েছেন শুধু।

রুপা জানালেন, বাবা সামান্য চা শ্রমিক। হঠাৎই বাগান বন্ধ হয়ে যায়। বাবা মা ও এক ভাই নিয়ে চারজনের সংসারে দু’বেলা পেট ভরে খাবার জুটতো না। তিনি বলেন, ‘‘এই অনটন সহ্য করতে না পেরে কাজের খোঁজে পাশের চা বাগানের দুই মহিলার সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে ট্রেনে উঠে পড়েছিলাম। ট্রেনে উঠে সোজা দিল্লিতে পৌঁছনোর পর ওই দুই মহিলা তাঁকে ছেড়ে চলে যান। তখন দিশেহারা অবস্থা। রাজপথে ঘুরতে ঘুরতে দেখা হয়ে যায় নিশা কেইউ ও সিজি সিবু নামে নয়াদিল্লির এক দম্পতির সঙ্গে। তাঁরাই আমাকে তাঁদের বাড়িতে আশ্রয় দেন। এতদিন তাঁদের মেয়ের মতো ওই বাড়িতে ছিলাম। বাড়িতে মায়ের কাছে ফিরতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’

কিন্তু গত সাত বছর ধরে রূপা তাঁর বাড়ির ঠিকানা বলতে পারেননি। যার বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলেন রূপা, সেই মহিলা নিশা কেইউ বলেন, ‘‘ওকে দিশাহীন ভাবে ঘুরতে দেখে আমরা বাড়িতে নিয়ে যাই। কিন্তু ওর বাড়ির ঠিকানা বলতে পারছিল না রূপা। শুধু জানিয়েছে ধওলা চা বাগান। কোন রাজ্য কোন জেলা কিছুই বলতে পারেনি। আমাদের এক পুলিশ অফিসার বন্ধু তিন মাস আগে আমাদের ঘরে আসেন। তাঁকে বিষয়টি জানানোর পর তিনিই এর পর খুঁজে বের করেন রূপার ঠিকানা। তাঁর সাহায্য পেয়েই আজ আমরা রূপাকে তাঁর মায়ের হাতে তুলে দিতে পেরেছি।’’

শামুকতলা থানার ওসি এলপি ভূটিয়া জানান, রূপার খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিমকে দিল্লিতে পাঠানো হয়। তারাই আজ রূপাকে নিয়ে শামুকতলায় এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এর পরেই আমরা রূপাকে তাঁর মায়ের হতে তুলে দিলাম। নয়াদিল্লির ওই দম্পতি ভাল বলেই আজ রূপাকে আমরা উদ্ধার করতে পারলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

missing police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE