E-Paper

নিরাপত্তায় নজর, জেলা পুলিশকর্তার রাত-টহল

শনিবার রাত ১০টার পরে সেইসব রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে ‘টহলদারি’ চালিয়েছেন পুলিশ সুপার উমেশ খণ্ডবহালে।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:১৬
সাইকেল চালিয়ে জলপাইগুড়িতে রাত-টহলে পুলিশ সুপার, কোতোয়ালি থানার আইসি-সহ পুলিশ কর্মীরা।

সাইকেল চালিয়ে জলপাইগুড়িতে রাত-টহলে পুলিশ সুপার, কোতোয়ালি থানার আইসি-সহ পুলিশ কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।

রাত ১০টা, বৃষ্টি শুরু হয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরের পোস্ট অফিস মোড়ের আলো-আঁধারি রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খণ্ডবহালে। তাঁর সঙ্গে কোতোয়ালি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত, বিভিন্ন ওসি এবং মহিলা পুলিশবাহিনী। সকলেই সাদা পোশাকে। সাইকেল নিয়ে পুলিশ আধিকারিকেরা গেলেন জলপাইগুড়ি নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে। তার পরে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে। হাসপাতাল চত্বরে ক’জন পুলিশকর্মী আছেন, দেখলেন পুলিশ সুপার।

সেখান থেকে বেরিয়ে পুলিশ সুপার রওনা দিলেন দিনবাজার দিয়ে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের দিকে। আলো-আঁধারি যে রাস্তা দিয়ে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতায়াত করেন, সেই রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যান পুলিশ সুপার। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পৌঁছে কোন কোন পুলিশকর্মীর ডিউটিতে থাকার কথা, তাঁরাই আছেন কিনা মিলিয়ে দেখে নিলেন তিনি। ফেরার পথে শহরের বেশ কিছু রাস্তায় চক্করও কাটলেন তিনি ও তাঁর সহকর্মী আধিকারিকেরা।

আর জি কর-সহ সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনার জেরে রাজ্য জুড়ে মেয়েদের পথে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। জলপাইগুড়ির বেশ কিছু রাস্তা, বিশেষত হাসপাতালের আশপাশে অন্ধকারে ডুবে থাকা রাস্তায় মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। শনিবার রাত ১০টার পরে সেইসব রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে ‘টহলদারি’ চালিয়েছেন পুলিশ সুপার উমেশ খণ্ডবহালে। তিনি বলেন, “নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, হাসপাতালের আশপাশের রাতের নিরাপত্তা নিজে দেখে এলাম। সেই সঙ্গে পুলিশকর্মীরা কেমন ডিউটি দিচ্ছেন, যাচাই করে সকলকে সতর্কও করলাম।”

আর জি কর কাণ্ডের পর থেকে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে লাগাতার বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তুলছে। অরাজনৈতিক মিছিল থেকেও স্লোগান উঠছে পুলিশকে প্রশ্ন করে। পুলিশের একাংশের দাবি, ক্রমাগত পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এক দিকে যেমন বাহিনীর অন্দরে মনোবল ধাক্কা খেতে পারে, তেমনই ক্রমাগত প্রশ্ন ওঠায় পুলিশের ভাবমূর্তিও ধাক্কা খাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার জেলা জুড়ে বিশেষ অভিযান চালিয়ে নানা অভিযোগে ৫২০ জনকে গ্রেফতার করেছিল জেলা পুলিশ। তার পরেই সাইকেল নিয়ে পুলিশ সুপার নিজেই টহলদারিতে বেরিয়ে পড়ায় জনমানসে বার্তা পৌঁছে দেওয়া গেল বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন সমাজের সব স্তরের প্রতিনিধিরাই। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, প্রতিদিন তো পুলিশ সুপার সাইকেল নিয়ে রাস্তায় থাকবেন না। সেই দিনগুলির নিরাপত্তা কী হবে? নাগরিক সমাজেরই একাংশের দাবি, শুধু পুলিশ নয়, সচেতন হতে হবে সকলকেই। তা হলেই রাতের রাস্তা মহিলা এবং সকলের জন্য নিরাপদ হবে। তবে এই সচেতন করার ক্ষেত্রেও পুলিশ-প্রশাসনকেই বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে, দাবি নাগরিক সমাজের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jalpaiguri Police patrol police super

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy