রাত পাহারার জন্য সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের আরজি পার্টি তৈরির পরামর্শ দিল পুলিশ। এই ঘটনায় বাসিন্দাদের নিরাপত্তার দায় পুলিশ পুরোপুরি তাঁদের উপরেই চাপাতে চাইছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে পুলিশের দাবি, রাজনৈতিক যা গণ্ডগোল হচ্ছে তার অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, পুলিশ গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে যে পরামর্শ দিচ্ছেন সেটা পুরোপুরি আলাদা বিষয়। ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো, অপরাধীদের চিহ্নিত করার জন্য ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “এটা আমাদের নিজস্ব ব্যাপার। কমিউনিটি পোগ্রাম। এটা করার অর্থ ওই এলাকাকে অপরাধ মুক্ত করার চেষ্টা। সে জন্য অপরাধীদের চিহ্নিত করা। যারা অপরাধ জগতে ঢুকতে শুরু করেছে তাঁদের মূলস্রোতে নিয়ে আসা। এর সঙ্গে অন্য বিষয় যুক্ত নয়। কোথাও কোনও হামলা হলে রাজনৈতিক গণ্ডগোলের অভিযোগ পেলে পুলিশ সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেবে।”
পুলিশের যুক্তি, আরজি পার্টিতে যারা থাকবেন তাঁরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। প্রয়োজনীয় তথ্য জানাবেন। সে অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে। সিভিক ভলান্টিয়ার্সরা যে কাজ করেন সেই কাজও তাঁরা করতে পারবেন। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন জানান, সন্ত্রাসের নানা অভিযোগ পাওয়ার পরে ওই এলাকায় পুলিশি টহল বাড়াতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশি ক্যাম্প করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, “আরজি পার্টির বিষয়টি আমার জানা নেই। কিন্তু রাজনৈতিক গণ্ডগোল নিয়ে যে অভিযোগ আসছে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে।”
গণনার পরে ওই এলাকাগুলিতে একের পর এক হামলার অভিযোগ উঠেছে। রাতের অন্ধকারে বাইরে থেকে সেখানে লোক ঢুকে অপরাধ করার চেষ্টা করছে। ওই অবস্থায় সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা অনেকেই ঘরছাড়া হয়ে বাইরে রয়েছেন। অভিযোগ, গণনার দিন রাত থেকেই ছিটমহলে হামলা শুরু করে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। মারধর, বাড়ি ভাঙচুর, বাড়ি থেকে গবাদি পশু নিয়ে চলে যাওয়া, দোকানে তালা দেওয়া এবং বেশ কয়েকজনের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে জেলাশাসকের কাছে ওই বিষয় নিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তাতে সামিল ছিল বাম ও বিজেপি নেতৃত্ব। বিকেলেই পুলিশ দিনহাটার পোয়াতুর কুঠি সাবেক ছিটমহলে গিয়ে আরজি পার্টি এবং গ্রাম উন্নয়ন কমিটি গড়ার পরামর্শ দেন। কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “দিনে-রাতে হামলা হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে দেশের নতুন নাগরিকদের। পুলিশের আরজি পার্টি গড়ার প্রস্তাব দেওয়ার অর্থ নিরাপত্তার দায় তাঁদের উপরেই ঠেলে দেওয়া। যা মানা যায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy