মরানদীর কুঠি গ্রামে উত্তেজনা, বুধবার কোচবিহারে। —নিজস্ব চিত্র।
গরু-চোর সন্দেহে পুলিশেরই এক ‘সোর্সকে’ আটক করার অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ি থানার দক্ষিণ মরা নদীর কুঠি এলাকার ঘটনা। ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে, গ্রামবাসীদের সঙ্গে রীতিমতো সংঘর্ষ বাধে তাঁদের। গ্রামবাসীদের আক্রমণে এক এএসআই-সহ তিন পুলিশ কর্মী জখম হন বলেও অভিযোগ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দিন কয়েক ধরে পর-পর চুরি হয়েছে গ্রামে। তার পর থেকে রাত পাহারায় বসেছেন গ্রামবাসী। বুধবার ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ তাঁরা দেখেন, এক যুবক মোটরবাইক ঠেলে হাঁটাপথে যাচ্ছেন ওই গ্রামের ভিতর দিয়ে। সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশ পৌঁছয়। অভিযোগ, যুবককে পুলিশ উদ্ধারের চেষ্টা করলে পুলিশের উপরেই হামলা চালান গ্রামবাসীদের একটি অংশ। তাতে এক অফিসার (এএসআই)-সহ তিন জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে, কোচবিহারে পুলিশের ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) চন্দন দাসের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে এক ‘অপরাধীকে’ গ্রেফতার করতে পুলিশ ওই গ্রামের ভিতর দিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক যুবক, যিনি পুলিশের ‘সোর্স’ হিসাবে কাজ করেন। তাঁর সঙ্গে মোটরবাইক ছিল। তিনি পুলিশের ভ্যান থেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়ে একটি রাস্তায় ঢুকে পড়েন। তাঁর সঙ্গে পুলিশের গাড়ির দূরত্ব বেড়ে যায়। সে সময়েই গ্রামবাসীরা গরু-চোর সন্দেহে ওই ব্যক্তিকে আটক করেন।
গ্রামের বাসিন্দা অপরেশ চক্রবর্তী দাবি করেন, ওই ব্যক্তির গতিবিধি তাঁদের কাছে ‘সন্দেহজনক’ ঠেকে। প্রথমে গ্রামবাসীর কাছে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর মোটরবাইকে তেল নেই। কিন্তু মোটরবাইকে প্রচুর তেল ছিল। দ্বিতীয়ত, তিনি বাড়িতে ফোন করব বলে পুলিশকে ফোন করেন। যে ফোন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ পৌঁছয়। তাতেই খেপে ওঠেন গ্রামবাসী। অপরেশের অভিযোগ, ‘‘যখন গ্রামে চুরি হয়, তখন পুলিশকে পাওয়া যায় না। অথচ, সন্দেহজনক কাউকে আটক করলে সঙ্গে-সঙ্গে পুলিশ পৌঁছে যায়। এটা কী করে সম্ভব?’’ আর এক বাসিন্দা পুলিন বর্মণ বলেন, ‘‘আমার বাড়ি থেকে তিনটি গরু চুরি হয়েছে। এক রাতে গ্রাম থেকে সাতটি গরু চুরি হয়েছে। তার বাইরেও একাধিক চুরি হয়েছে। অথচ, পুলিশ তার পরেও সক্রিয় হয়নি। আমরা চাই, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করুক পুলিশ।’’ পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত গ্রামবাসীদের প্রত্যেককে আমরা বার-বার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তার পরেও পুলিশকর্মীদের উপরে হামলা চালান তাঁরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy