Advertisement
০৮ অক্টোবর ২০২৪

টোকাটুকিতে বাধা পেয়ে স্কুলে ভাঙচুর

টোকাটুকিতে বাধা দেওয়ায় স্কুলে ব্যাপক ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে একাংশ পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। শুত্রবার দুপুর ১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলার কালিয়াচক-৩ ব্লকের রাজনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ফের কড়া পাহারা দিলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে বলে হুমকি দিয়ে গিয়েছে একদল পরীক্ষার্থী। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্কুলের শিক্ষকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৩৫
Share: Save:

টোকাটুকিতে বাধা দেওয়ায় স্কুলে ব্যাপক ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে একাংশ পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। শুত্রবার দুপুর ১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলার কালিয়াচক-৩ ব্লকের রাজনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ফের কড়া পাহারা দিলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে বলে হুমকি দিয়ে গিয়েছে একদল পরীক্ষার্থী। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্কুলের শিক্ষকেরা।

এই ঘটনায় এদিন ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে স্কুল চত্বরে। পরে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অভিযোগ, এ দিন পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকলেও ছাত্ররা মিনিট দশেক ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে। স্কুল চত্বরে থাকা পুলিশদের পৌঁছতে সময় লেগে যায়। পরীক্ষার সময় নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই স্কুলে পরীক্ষার সিট পড়েছে বৈষ্ণবনগর উচ্চ মাধ্যমিক এবং জয়েনপুর উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের। এ দিন ছিল প্রথম ভাষার পরীক্ষা। কেন্দ্রে শিক্ষকেরা কড়া পাহারা দেওয়ায় পরীক্ষার শেষে বৈষ্ণবনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাংশ পড়ুয়া ওই স্কুলে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা স্কুলের ৩, ৪, ৬ এবং ৮ নম্বর ঘরে চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে।

স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রায় ৩০টির মতো চেয়রা-টেবিল ভাঙচুর করা হয়েছে। আরও অভিযোগ, ছাত্ররা শিক্ষকদের হুমকি দিয়ে গিয়েছে পরবর্তী কালে কড়া পাহারা দিলে ফের এমনই তাণ্ডব চালান হবে। গত বছরও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বৈষ্ণবনগর উচ্চ মাধ্যমিকের ছেলেরা এই স্কুলে ভাঙচুর চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। ফের ভাঙচুরের ঘটনায় স্কুলের ছাত্রদের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

বৈষ্ণবনগর স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতে অশান্তির পরিবেশ না তৈরি হয় তার জন্য অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার দিন গত সোমবার পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষা কেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় বারবার করে এই স্কুলের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় কোনও স্কুলই এই স্কুলের ছেলেদের নিতে আগ্রহী হয় না। তাই স্কুলের সুনাম নষ্ট যাতে না হয় সে জন্য বৈঠক করা হয়েছিল।

তবুও একই ঘটনা ঘটায় ক্ষুব্ধ তাঁরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা এই সেন্ট্রাল ইন চার্য অংশুমান ঝা বলেন, “এমন ঘটনা কখনওই কাম্য নয়। ঘটনাটি খুবই লজ্জাজনক।” আজ, শনিবার পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের স্কুলে ডাকা হয়েছে। তবে সব পরীক্ষার্থীদের নয়, যে সমস্ত পরীক্ষার্থীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে কেবল মাত্র তাদেরই ডাকা হয়েছে।

রাজনগর স্কুলের প্রধান শিক্ষক জমিদার হোসেন বলেন, “পরীক্ষা শেষে একাংশ পরীক্ষার্থী স্কুলে ভাঙচুর চালায়। এমনকি তারা ফের এমন ঘটনা ঘটাবে বলে হুমকিও দিয়ে গিয়েছে। নিরাপত্তা বাড়ানো না হলে সমস্যা বাড়বে।”

অবশ্য পরীক্ষার প্রথম দিন টোকাটুকির ঘটনা ঘটেছে মানিকচকে। সেখানে মথুরাপুর বিএসএস হাই স্কুলে পরীক্ষা শুরু হওয়ার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে বহিরগতরা নকল সরবরাহ করে বলে অভিযোগ। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্কুলে এই স্কুলে এনায়েতপুর হাই স্কুল, মানিচক এনবি হাই মাদ্রাসা এবং লাল বাথানি হাই স্কুলের সিট পড়ে। প্রায় সাড়ে সাতশো জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন।

এ দিন স্কুলের পেছন দিকে কোনও পুলিশ না থাকায় বাইরে থেকে কিছু বহিরাগত পাঁচিল টপকে নকল সরবরাহ করে। বাইরে থেকেও চিত্‌কার করা হয়। তবে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে টোকাটুকি হয়নি বলে দাবি করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, “ভালভাবে পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে কোনও টোকাটুকি হয়নি। বাইরে কি হয়েছে তা আমার জানা নেই।”

মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কালিয়াচকের একটি স্কুলে গোলমাল হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

higher secondary copying
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE