Advertisement
E-Paper

দোতলা বাসে প্রশ্ন

সত্তরের দশকেও কোচবিহারের বিভিন্ন রুটে চারটি দোতলা বাস চলাচল করত। কয়েক বছর আগে ওই সংখ্যা কমে অর্ধেক হয়। এখনও সাকুল্যে সবেধন নীলমণি একটি মাত্র বাস রয়েছে। সেটাও অবশ্য রাস্তায় সে ভাবে নামানো হয় না।

অরিন্দম সাহা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ১৩:৩০
ঐতিহ্য: এনবিএসটিসির দোতলা বাস। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

ঐতিহ্য: এনবিএসটিসির দোতলা বাস। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

সত্তরের দশকেও কোচবিহারের বিভিন্ন রুটে চারটি দোতলা বাস চলাচল করত। কয়েক বছর আগে ওই সংখ্যা কমে অর্ধেক হয়। এখনও সাকুল্যে সবেধন নীলমণি একটি মাত্র বাস রয়েছে। সেটাও অবশ্য রাস্তায় সে ভাবে নামানো হয় না। কোচবিহারে ওই ঐতিহ্য প্রায় বিলুপ্তির পথে। ওই ঘটনায় বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দোতলা বাসের ঐতিহ্য রক্ষায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের ভূমিকা নিয়েও তাদের অনেকে প্রশ্ন তুলছেন।

নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সুবলচন্দ্র রায় অবশ্য বলেন, “বিশেষ দিনে মাঝে মধ্যে একমাত্র দোতলা বাসটি রাস্তায় নামানো হয়। নতুন বাস কেনার চেষ্টাও হয়েছে। কিন্তু নির্মাতা সংস্থাগুলি আগ্রহ দেখায়নি।” নিগমের পরিচালন বোর্ডের সদস্য আবদুল জলিল মিঁয়া বলেন, “হেরিটেজ আবেগের সঙ্গে দোতলা বাস জড়িয়ে রয়েছে। নতুন বাস কেনার চেষ্টাও চলছে।”

এনবিএসটিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, দোতলা বাসটি রাস্তায় নিয়মিত নামানোর ক্ষেত্রে মূলত দু’টি সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রথমত, সাধারণ বাসগুলি এক লিটার ডিজেলে গড়ে প্রায় চার কিমি যায়। সেখানে দোতলা বাস গড়ে দুই কিমি কম মাইলেজ দিচ্ছে। তার উপর সময় বেশি লাগে বলে যাত্রীরা দ্রুত গতির গাড়িতে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তা ছাড়া, ওই বাসের মেরামতির যন্ত্রাংশ মেলা নিয়েও মাঝে মধ্যে সমস্যা হয়। তারপরেও পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য বাসটি চালানোর উদ্যোগ হয়েছিল। কিন্তু সে ভাবে ‘ভাড়া’ মেলেনি। সব মিলিয়েই বাসটি ডিপোয় বসিয়ে রাখতে হচ্ছে।

এতে অবশ্য ওই বাস সচল রাখা নিয়েও সমস্যা হতে পারে এমন একটা আশঙ্কাও রয়েছে। বাসিন্দাদের অনেকেই অবশ্য ওই যুক্তি মানতে চাননি। কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “লাভক্ষতির অঙ্কে দোতলা বাসকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়। ঐতিহ্য ধরে রাখতেই বাসটি অন্তত সপ্তাহের একটি দিনে নির্দিষ্ট রুটে নিয়মিত চালানো দরকার। সেক্ষেত্রে দোতলা বাস নিয়ে আবেগ রক্ষার পাশাপাশি পর্যটক আকর্ষণ বাড়ানোর সুবিধে হবে।” নিগমের সিটু অনুমোদিত কর্মী সংগঠনের নেতা জগৎজ্যোতি দত্ত বলেন, “মিউজিয়ামে রাখলে চলবে না, দোতলা বাস রাস্তায় সচল রাখা হোক। এ জন্য যা গুরুত্ব দেওয়ার দরকার সেটাই হচ্ছে না।” নিগমের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মী জানান, কোচবিহার থেকে পুণ্ডিবাড়ি, সোনাপুর, তুফানগঞ্জ, বক্সিরহাট রুটে এক সময় দোতলা বাস চলত। ভাল ভিড়ও হত। সে সবই এখন স্মৃতি।

Double-decker bus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy