তিন মাস ধরে শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ চললেও তা এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এখনও প্রতিদিনই ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন কয়েকশো রোগী। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনবেন বলে জানান পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। কথা বলবেন স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গেও। ডেঙ্গির উপসর্গতে মৃত রাজা রামমোহন রোডের বাসিন্দা বাপন দে’র পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মঙ্গলবার এ কথা জানান মন্ত্রী। নার্সিংহোম এবং হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা।
শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসেবেই আটশোর কাছাকাছি। বেসরকারি হিসেবে তা অনেক বেশি। বাপনবাবু-সহ ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গি এবং ওই রোগের উপসর্গে। হাসপাতালে আসা জ্বরের রোগীদের মধ্যেও একাংশের ডেঙ্গি হয়েছে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘কলকাতায় যাচ্ছি। স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’’ তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গি প্রতিরোধের দায়িত্ব পুরসভারই। তারা কী করছে তাঁর জানা নেই।
এ দিকে হাসপাতালে জ্বরের রোগীদের রাখার জায়গা নেই। মেডিসিন বিভাগের প্রতিটি শয্যায় তিনজন করে রোগী। মেঝেতেও ভর্তি রয়েছেন রোগীরা। নতুন রোগীদের স্যালাইন লাগিয়ে তাঁদের জায়গা খুঁজে নিতে বলা হচ্ছে। চিকিৎসকদের একাংশ জানান, নিরুপায় হয়ে একটু সুস্থ হতেই রোগীদের ছেড়ে দিতে হচ্ছে।
শিলিগুড়িতে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ও এখনও পর্যন্ত কতজন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন সে সম্পর্কে স্বাস্থ্য দফতরের থেকে তথ্য চেয়েছেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অবশ্য দাবি, তাঁরা সমস্ত তথ্যই পুরসভাকে দিচ্ছেন। তা হলে পুরসভা বা স্বাস্থ্য দফতর কেন প্রকৃত তথ্য বলতে চাইছেন না সেই প্রশ্ন উঠেছে। মেয়র বলেন, ‘‘আমাদের বলতে নিষেধ করা হয়েছে। যা বলার স্বাস্থ্য দফতরই বলবে। কেন তারা বলছেন না?’’ তাঁর দাবি, কলকাতা ট্রপিক্যাল মেডিসিন থেকে বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো উচিত। ডেঙ্গি জ্বর, না অন্য কিছু, অনেকের মধ্যেই সেই প্রশ্ন জাগছে।
বাপনবাবুর পরিবারের অভিযোগ, নবমীর রাতে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে তিলকরোডের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে গেট খোলা হয়নি। তখন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। ভর্তির পর চিকিৎসক জানান, রোগীর কোনও সমস্যা নেই। অথচ রোগী আরও অসুস্থ রোধ করছেন জানালে তাঁকে রেফার করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। পরিবারের লোকেরা তাঁকে শনিবার ভোর ৬টা নাগাদ সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানে কর্মব্যরত চিকিৎসক দেখলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাঁচ ঘণ্টা পরে আসেন বলে অভিযোগ। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন ডেঙ্গির শক সিনড্রমে রোগী আক্রান্ত। অথচ মৃত্যুর পর দেওয়া শংসাপত্রে কেন তা লেখা হয়নি সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর পরিবার। মন্ত্রী জানান, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে কেন রেফার করা হল তিনি খোঁজ নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy