অভ্যর্থনা: লজেনকে উত্তরীয় পড়িয়ে দিচ্ছেন মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
একটানা পনেরো বছর তিনি তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দেহরক্ষী ছিলেন। সেই লজেন মোচাহারি এখন তৃণমূলের গুড়িয়াহাটি ১ নম্বর অঞ্চলের সভাপতি। মঙ্গলবার নিজের বাড়িতে ডেকে রবীন্দ্রনাথবাবুই লজেনবাবুকে ওই দায়িত্ব দেন। আর তা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে তৃণমূলে। দলের তাঁর বিরোধী শিবিরের লোকজন প্রশ্ন তুলেছেন, যিনি কোনওদিন দলই করলেন না। তাঁকে কী করে ওই পদে বসানো হল। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে কি তৃণমূলের অন্য কেউ ছিল না?
রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “পনেরো বছর ধরে লজেনবাবু আমার সঙ্গে ছিলেন। সকাল থেকে রাত সমস্ত জায়গায় আমার সঙ্গে যেতেন। ভোটের প্রচারেও থাকতেন। সবমিলিয়ে তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। তিনি এখন চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। এ বার দলের হয়ে কাজ করবেন।” লজেনবাবুও জানান, রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে থাকতে থাকতেই রাজনীতির পাঠ নিয়েছেন তিনি। বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মনে প্রাণে তৃণমূল করছি। পুলিশের চাকরি করতাম। রবীন্দ্রনাথবাবুর দেহরক্ষী ছিলাম। তাই সরাসরি রাজনীতি করিনি। এ বারে সুযোগ এসেছে, তাই করছি। আশা করছি সবাইকে নিয়ে তৃণমূলের সংগঠন শক্তিশালী করতে পারব।” দলীয় সূত্রের খবর, ২০০১ সালে তখন রবীন্দ্রনাথবাবু তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি। সেই সময় রবীন্দ্রনাথবাবুর দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ করা হয় লজেনবাবুকে।
রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামীদের অনেকেই বলেন, বামেদের বিরুদ্ধে প্রচারে গ্রামে-গঞ্জে যেতেন। যে কোনও সময় হামলার মুখে পড়তে হতে পারে। সেই সময় নেতাকে ‘আগলে’ রেখেছিলেন তাঁর দেহরক্ষী। তৃণমূল ক্ষমতায় আসা থেকে রবীন্দ্রনাথবাবু মন্ত্রী হওয়ার পরেও লজেনবাবুর গুরুত্ব কমেনি। তিনি ৩১ অক্টোবর অবসর নেওয়ার সময়ই জানিয়েছিলেন দলের কাজে থাকবেন। মন্ত্রীও জানিয়েছিলেন, তাঁকে দায়িত্বে আনবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরোধী এক তৃণমূল নেতা বলেন, “যতই কাছের হোক না কেন, একজন পুলিশ কর্মীকে হঠাৎ করে দলের বড় দায়িত্ব দেওয়া ঠিক হয়নি। তাতে সংগঠনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।” রবীন্দ্রনাথবাবু জানান, ওই অঞ্চলের দায়িত্বে যিনি ছিলেন সেই মণীন্দ্রনাথ রায় পদত্যাগ করেছেন। ওই পদে লজেনবাবুকে বসানো হয়েছে। এ ছাড়া কার্যকরী সভাপতি হিসেবে আব্দুল কাদের এবং জীবন সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মণীন্দ্রবাবু বলেন, “২০১০ সাল থেকে সভাপতি ছিলাম। আমি পঞ্চায়েত সমিতিরও সদস্য। আমাকে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy