Advertisement
E-Paper

দেরি কেন, বকল কোর্ট

বিচারকের প্রশ্ন ও নির্দেশ মাথা নিচু করে শুনছিলেন বরুণবাবু! বিচারকের কথা শেষ হতেই বরুণবাবুকে বিচারকের দিকে তাকিয়ে ক্ষীণস্বরে বলেন, ‘‘স্যার, আসামিদের মেডিক্যাল করানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম! সেখানেই দেরি হয়েছে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:২৫
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

অভিযুক্তদের দেরি করে আদালতে তোলার অভিযোগে ভরা এজলাসে মুখ পুড়ল পুলিশের। বিচারকের ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন এক সাব ইন্সপেক্টর।

রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতের এজলাসে। রায়গঞ্জের হাতিয়া হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষককে মারধর, স্কুলে ভাঙচুর ও গোলমাল চলাকালীন পুলিশকে মারধর-সহ একাধিক অভিযোগে ধৃত এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ তিন অভিযুক্তকে রবিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ রায়গঞ্জ জেলা আদালতের লকআপে নিয়ে যায় পুলিশ। এরা হল অজিত খান, আনোয়ার খান ও লতিফুর খান। আদালতের পুলিশকর্মীরা পৌনে ২টা নাগাদ অভিযুক্তদের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক অভিরাম বর্মনের এজলাসে হাজির করেন। তাঁদের সঙ্গে এজলাসে হাজির হন স্কুলে গোলমালের মামলার রায়গঞ্জ থানার তদন্তকারী সাব ইন্সপেক্টর বরুণ কর্মকার। অভিযুক্ত ও সরকারি আইনজীবীদের দীর্ঘ সওয়াল জবাব শুনে অভিরামবাবু সব অভিযুক্তেরই জামিন নাকচ করে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

এর পরেই আদালতের নির্দেশে কাঠগড়ায় ওঠেন বরুণবাবু। বিচারক অভিরামবাবু বরুণবাবুকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আসামিদের কোর্টে আনতে কেনও দেরি হল? আপনারা কী মনে করেন?’’ অভিরামবাবু বলেন, ‘‘জানেন তো আজ ছুটির দিন! আমরা, উকিলবাবু, পুলিশ, আদালতের কর্মীরা সকলেই সকাল থেকে না খেয়ে, স্নান না করে আপনারা কখন আসামি পাঠাবেন তার জন্য বসে রয়েছি। এর পর থেকে ছুটির দিনে বেলা বারোটার মধ্যে কোর্টে আসামিদের হাজির করাবেন। আইসিকে গিয়ে বলুন।’’

বিচারকের প্রশ্ন ও নির্দেশ মাথা নিচু করে শুনছিলেন বরুণবাবু! বিচারকের কথা শেষ হতেই বরুণবাবুকে বিচারকের দিকে তাকিয়ে ক্ষীণস্বরে বলেন, ‘‘স্যার, আসামিদের মেডিক্যাল করানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম! সেখানেই দেরি হয়েছে।’’ বরুণবাবুর ব্যাখ্যা শুনে অভিরামবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালে কোনও গোলমাল হলে আপনারা হাসপাতালে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেন। তা হলে হাসপাতাল আপনাদের কথা শুনছে না কেন?’’

পরে এই বিষয়ে বরুণবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি! তবে পুলিশের দাবি, স্কুলে গোলমালের ঘটনায় পলাতক এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য এ দিন বরুণবাবু রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ এলাকায় যান। সেখানে বহু খোঁজাখুজি করেও অভিযুক্তের সন্ধান পাননি তিনি। তাতেই অভিযুক্তদের আদালতে আনতে তাঁর দেরি হয়।

পরে উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, আদালত থেকে লিখিত কোনও নির্দেশ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।

ওই স্কুলেরই ইংরেজির শিক্ষক অমিত রায়ের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। শনিবার দুপুরে বাসিন্দাদের হামলায় জখম হন অমিতবাবু। তিনি নিজেকে তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক ও শিক্ষা বিষয়ক কর্মচারী ফেডারেশনের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক বলে দাবি করলেও ওই সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সংঘমিত্রা ভট্টাচার্য তা মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘এমন কেউ আমাদের সংগঠনে ছিলেন না।’’ পুলিশ অমিতকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু তিনি ছুটি নিয়ে উধাও হয়ে যান বলে পুলিশের দাবি।

Raiganj Raiganj district court police negligence রায়গঞ্জ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy